২৪ ঘন্টা আগেই বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022) বিদায়ের চিঠি লিখে দিয়েছিল নেইমার জুনিয়রকে। কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবলের পোস্টার বয়। এবার নেইমারের স্বপ্নভঙ্গের শরিক হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও। মরোক্কার কাছে হেরে বিদায় ঘটে গেল টুর্নামেন্টের অন্যতম এক ফেভারিটদের।
রোনাল্ডোর বিদায় নিশ্চিত করে দেওয়ার মঞ্চেই ইতিহাস গড়ে ফেলল মরক্কো। প্ৰথম কোনও আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল মরক্কো। আল থামুমলাম স্টেডিয়ামে আগাগোড়া প্রাধান্য বজায় রেখে গেলেও পর্তুগাল গোল করতে পারল না। ম্যাচে ফারাক গড়ে দিল বিরতির ঠিক আগে ৪২ মিনিটে ইউসেফ এন নাসেরি। একমাত্র গোলই ভেঙেচুরে দিল সিআরসেভেনের বিশ্বকাপের স্বপ্ন।
খেলার শুরু থেকে অবশ্য আক্রমণ বেশি ছিল পর্তুগালের। দুই প্রান্ত ব্যবহার করে বক্সে ক্রস করার চেষ্টা করছিল তারা। ৪ মিনিটের মাথায় ব্রুনো ফের্নান্দেসের ফ্রিকিক থেকে দুরন্ত হেড করেন জোয়াও ফেলিক্স। তাঁর হেড বাঁচিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। সেট পিস থেকে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছিল পর্তুগাল। ১২ মিনিটের মাথায় ব্রুনোর আরও একটি ফ্রিকিক থেকে গোল করার জায়গায় চলে গিয়েছিল পর্তুগাল। রাফায়েলের শট আটকে যায় মরক্কোর ডিফেন্ডারের গায়ে। প্রথম ১৫ মিনিটে দু’বার প্রতি আক্রমণে ওঠা ছাড়া বিশেষ কিছু করতে পারেনি মরক্কো।
প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিট দাপট দেখাল মরক্কো। বলের দখল বেশি ছিল তাদের। ছোট ছোট পাসে খেলছিলেন হাকিমিরা। একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল পর্তুগাল বক্সে। তার ফলও মিলল। ৪২ মিনিটের মাথায় এগিয়ে গেল মরক্কো। নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাস খেলে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠে মরক্কো। বক্সে বল ভাসিয়ে দেন এল-ইদ্রিসি। আগুয়ান গোলরক্ষক কোস্তা বলের নাগাল পাওয়ার আগে অনেকটা লাফিয়ে হেডে গোল করেন এন-নেসিরি। গোল খাওয়ার পরে শোধ করার চেষ্টা করে পর্তুগাল। সুযোগও পায় তারা। বক্সের বাইরে থেকে ব্রুনো ফের্নান্দেসের শট বারে লেগে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে সাজঘরে যায় পর্তুগাল।
Youssef En-Nesyri: Rocketman 🚀🇲🇦 pic.twitter.com/EHuCnFFqEf
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) December 10, 2022
আরও পড়ুন: Ind Vs Bang: গা-ছাড়া ব্যাটিং-বোলিং, শের-ই বাংলায় ভারতকে ‘বিড়াল’বানালেন মেহেদি-শাকিব
৬৫ মিনিটের পর থেকে পুরো খেলাটাই হচ্ছিল মরক্কোর অর্ধে। গোল করার জন্য পর্তুগালের পুরো দল উঠে যায়। একের পর এক আক্রমণ হচ্ছিল। কিন্তু মরিয়া রক্ষণ করছিলেন মরক্কোর ফুটবলাররা। পর পর চারটি কর্নার পায় পর্তুগাল। কিন্তু সেখান থেকে ফসল তুলতে পারেননি রোনাল্ডোরা। গোল না পেয়ে অস্থির হয়ে উঠছিলেন পর্তুগালের ফুটবলাররা।
৮২ মিনিটের মাথায় একটুর জন্য গোল করতে পারেননি হোর্তা। রোনাল্ডোর সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে বক্সে ঢোকেন তিনি। বাঁ পায়ের বাঁক খাওয়ানো বল গোলে ঢুকছিল। শেষ মুহুর্তে তা বার করে দেন বোনো। সব রকম চেষ্টা করেও মরক্কোর রক্ষণ ভাঙা যাচ্ছিল না। উল্টে প্রতি আক্রমণ থেকে কয়েক বার উঠে আসছিল মরক্কো। তাতে সময় আরও যাচ্ছিল। সংযুক্তি সময়ে গোল করার দারুণ সুযোগ পান রোনাল্ডো। বক্সের মধ্যে থেকে তাঁর ডান পায়ের শট ভাল বাঁচান বোনো। ৯২ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মরক্কোর চেদিরা। ১০ জনে হয়ে যায় মরক্কো। তার পরেও গোল করতে পারেনি পর্তুগাল। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় রোনাল্ডোদের। বিশ্বের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোল স্কোরারকে ফিরতে হল শূন্য হাতেই। চোখের জলে মাঠ ছাড়লেন পর্তুগাল অধিনায়ক।
আরও পড়ুন: Lionel Messi : যাকে তাকে রেফারিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া উচিত নয়! বললেন ক্ষুব্ধ মেসি