২০০৬ সাল বেশিরভাগ লোকের জন্য মাত্র একটি বছর ছিল; ফুটবল ভক্তদের জন্য, এটি একটি বিশ্বকাপ বছর ছিল; কিন্তু কেরালার কান্নুরের জুশনা শাহিনের জন্য, এটি একটি স্বপ্নের শুরু যা পরবর্তীতে তাঁর জীবনকে বদলে দেয়। শাহিন, অনেকের মতই ফুটবল খেলা দেখেছেন ছোট থেকেই। কিন্তু আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসিকে দেখার পরেই বদলে যায় তাঁর খেলা দেখার নজর।
‘২০০৬ সালে কেরলের কান্নুরে আমার বাড়িতে বিশ্বকাপের খেলা দেখা হত নিয়মিত। সেই সময় আমাদের বাড়িতে মেসির একটি বিশাল ছবি ছিল। আমি জানতাম না উনি কে। আস্তে আস্তে আমি মেসির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠি। সংবাদপত্রে উনার সম্পর্কে লেখা খবর পড়তে শুরু করি। আর তাঁর পরেই আমি সিদ্ধান্ত নিই স্পোর্টস জার্নালিস্ট হওয়ার।’
স্প্যানিশ শিখতে চেয়ে বাবা-মায়ের কাছে বায়না করেছিলেন শাহিন। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্প্যানিশ পড়তে চলে যান ২০১৩ সালে। ২০১৯-এ সেখান থেকে বিদেশি ভাষায় স্নাতকোত্তর পাশ করে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকতা পড়তে স্পেনে পাড়ি দেন শাহিন। সেখানেই এখন স্বামী, সন্তান নিয়ে তাঁর ভরা সংসার। তবে মেসির সাক্ষাৎকার নেওয়ার স্বপ্ন কখনও ফিকে হতে দেননি।
স্বপ্ন পূরণের এই যাত্রায় সব সময় শাহিন পাশে পেয়েছেন তাঁর স্বামী আওয়াদ আহমেদকে। বার্সেলোনার অফিসে গিয়ে এক বার মেসির উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিও দিয়ে এসেছেন তাঁরা। তবে সে চিঠি মেসির হাতে পৌঁছেছে কি না, জানা যায়নি।চলতি বছরের শুরুর দিকে শাহিন আরও ২০ জন বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিকের সঙ্গে প্যারিসে গিয়ে পিএসজি-র অনুশীলন দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। স্বপ্নকে সেখানে কাছ থেকে দেখে এসেছেন। এত কাছে গিয়েও অবশ্য মেসির সঙ্গে কথা বলা হয়নি। সুযোগ পাননি। এক রাশ হতাশা বুকে চেপে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
তবে সাময়িক হতাশা কাটিয়ে উঠে আগামীর দিকে তাকিয়ে আছেন কেরলের তরুণী। মেসির সামনে অন্তত মিনিট পাঁচেকের জন্য দাঁড়াতে চান তিনি। কিছু ক্ষণ কথা বলে জীবন ধন্য করতে চান। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, এই সাক্ষাৎকার হয়তো আর্জেন্টিনীয় তারকা ভুলে যাবেন, কিন্তু তাঁর মনে থেকে যাবে আজীবন। ‘ফিলো নিউজ়’ নামে আর্জেন্টিনার একটি সংবাদমাধ্যমে মেসির ভক্ত শাহিনের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়। শাহিন মনে প্রাণে চান, কাতারে জীবনের শেষ বিশ্বকাপ যেন জিতে ফেরেন মেসির।
আরও পড়ুন: Lionel Messi: হ্যামস্ট্রিংয়ে সমস্যা! অনুশীলনে নামলেনই না মেসি, ফাইনাল খেলবেন তো?