রবিবাসরীয় সকালে প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি ভারতীয় ক্রিকেটার সেলিম দুরানি। জামনগরে নিজের বাড়িতেই তিনি মারা গিয়েছেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৮৮। ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত অসুখে। নিখুঁত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বছরের পর বছর দাপটে ভারতীয় দলে খেলে যাওয়া দুরানিকে বলা হত ‘প্রিন্স’। তাঁর ক্রিকেট কীর্তির সাক্ষী ইডেন গার্ডেনসও। ভারতের একাধিক ঐতিহাসিক জয়ের নায়কের প্রয়াণে ভারতীয় ক্রিকেটের একটি যুগের অবসান হল।
সেলিম দুরানির জন্ম আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে। তিনি ১৯৩৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে তাঁর বেড়ে ওঠা মূলত গুজরাটের জামনগরেই। এখানেই তাঁর ক্রিকেটে হাতেখড়ি। ১৯৬০ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় সেলিম দুরানির। জাতীয় দলের হয়ে ১৯৭৩ পর্যন্ত খেলেন তিনি।
বর্ণময় ক্রিকেট জীবন তাঁর। ১৯৬০ সালে মুম্বইয়ে টেস্ট অভিষেক। ১৯৬১-৬২ মরশুমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে অবদান ছিল বাঁ-হাতি স্পিনারের। শেষ ২ টেস্টে নিয়েছিলেন ১৮ উইকেট। ১৯৭১ সালে পোর্ট অফ স্পেনে ভারতের জয়েও রেখেছিলেন অবদান। আউট করেছিলেন ক্লাইভ লয়েড ও গ্যারি সোবার্সকে। তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের হাত ধরে পরের বছর মধ্যাঞ্চল দলীপ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
Easily one of the most colourful cricketers of India – Salim Durani.
Rest in Peace. ॐ शांति 🙏 pic.twitter.com/d5RUST5G9n
— Ravi Shastri (@RaviShastriOfc) April 2, 2023
আরও পড়ুন: Cricket :বাংলাদেশী ঝড়ে খড়কুটো আয়ারল্যান্ড, ১০ উইকেটে জয়, ক্রিকেটে ইতিহাস তাসকিনদের
পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে ফাইনালে বল হাতে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। আর ব্যাট হাতে রান তাড়া করার সময়ে নেতৃত্ব দিয়ে অপরাজিত থেকেছিলেন ৮৩ রানে। চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল, এটা দলীপ ট্রফি, নাকি দুরানি ট্রফি! কেরিয়ারের একমাত্র শতরান শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। কপিলে দেবের আগমনের আগে পর্যন্ত সময়ে দুরানিই যে শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার ছিলেন, এবিষয়ে অনেকেই একমত।
টেস্ট দলে একবার তাঁকে বাদ দেওয়ায় স্লোগান উঠেছিল, ‘নো দুরানি, নো টেস্ট’। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরের টেস্টে তাঁকে ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাচকেরা। এমনই ছিল তাঁর জনপ্রিয়তা। আর ছিল গ্ল্যামার। জনতার দাবিতে, ৬-৭ বার ছক্কা হাঁকানোর কথা অতীতে বহু বার বলেছিলেন দুরানি নিজেই। যা তাঁকে করে তুলেছিল বিখ্যাত। তবে তার অনেক আগে, ছয়ের দশকের গোড়াতেই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পেয়েছিলেন অর্জুন সম্মান।
২৯ টেস্টে এক সেঞ্চুরি সহ ১২০২ রান আর ৭৫ উইকেটের পরিসংখ্যানে তাই তাঁকে মাপা শুধু কঠিনই নয়, আদতে অসম্ভবই। এই পরিসংখ্যানের বাইরেও রয়ে গিয়েছে মাঠে তাঁর দাপটের মিথ। রবিবার সকালে ভারতীয় ক্রিকেট হারাল তার সেই ‘প্রিন্স’কে। শেষ হল একটি যুগের। রয়ে গেল কীর্তি।
আরও পড়ুন: IPL 2023: শুরুতেই হার কলকাতার, বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৭ রানে জয় পঞ্জাবের