ভারতীয় ক্রিকেটের শেষ নবাব মনসুর আলি খান পতৌদি বা টাইগার পতৌদি। ক্রিকেট মাঠে তাঁর আগ্রাসনের জন্য মনসুর আলি খান নাম বদলে হয়ে গিয়েছিল টাইগার।নবাব বংশের হওয়ায় জন্য তিনি খুব সহজেই জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। বেছে নিয়েছিলেন ক্রিকেটকে।
১১ বছর বয়সে নবাব হলেও ক্রিকেটকে কোনওদিন ভোলেননি তিনি। উইনচেস্টারে স্কুল ক্রিকেট খেলার সময় তিনি একটা মরশুমে করেছিলেন ১০৬৮ রান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি সাসেক্সের হয়ে নেমেছিলেন। যা ছিল রেকর্ড।
১৯৬১ সালে ইংল্যান্ডে একটি দুর্ঘটনায় বদলে যায় জীবন। একটি চোখ বাঁচানো গেলেও অপর চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এরপরেও পিছিয়ে যাননি তিনি। সেই একই বছরেই ডিসেম্বর মাসে তিনি নামেন ভারতের জার্সি গায়ে। প্রথম দুটো ইনিংসে তাঁর রান যথাক্রমে ১৩ ও ৬১। ক্রিকেটে পুরো ক্যারিয়ারই তিনি খেলে যান একটি চোখ নিয়ে। প্রথমে টুপি দিয়ে ঢেকে রাখতেন তাঁর চোখ। ধীরে ধীরে এক চোখে খেলার অভ্যাস তৈরি করে ফেলেন।
কেরিয়ারে দ্বিতীয় সিরিজেই তিনি হয়ে যান সহ অধিনায়ক। কিন্তু সিরিজে অধিনায়ক চোট পাওয়ায় তাঁর কাঁধে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আসে। মাত্র ২১ বছর বয়সেই তিনি জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়ে যান। ভারতের অন্যতম তরুণ অধিনায়ক এখনও পর্যন্ত তিনিই। কেরিয়ারে মোট ৪৬টা টেস্ট খেলেছেন তিনি। যারমধ্যে ৪০টাতেই অধিনায়ক ছিলেন। যারমধ্যে মাত্র ১৯টা ম্যাচে হারতে হয় ভারতকে। ৯টা ম্যাচ ভারত জেতে। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি অধিনায়ক ছিলেন। এরপর অজিত ওয়াডেকরের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়।
১৯৬২ সালে উইসডেন ক্রিকেটার অফ দ্যা ইয়ার হন তিনি। ক্যারিয়ারে তিনি ৬টা শতরান করেন। আন্তর্জাতিক স্তরে তিনি করেছেন ২৭৯৩ রান। টেস্টে ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সবথেকে বেশি বল খেলার রেকর্ড আছে তাঁর দখলে। তিনি ৫৫৪টা বল খেলেছিলেন একটা ইনিংসে।২২ সেপ্টেম্বর ২০১১ তে পাতৌদির মৃত্যু হয়।