চিরঘুমে শায়িত প্রিয়তমা। আর তাঁর সিঁথি রাঙিয়ে দিচ্ছেন তাঁর ভালোবাসার মানুষটি। সেইসঙ্গে তাঁর প্রিয়তমা শুনতে পাবে না জেনেও, তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করছেন জীবনে আর কোনওদিনও তিনি বিয়ে করবেন না বলে। তাঁর স্ত্রীর আসনে চিরকাল তাঁর প্রিয়তমা-ই থাকবে। এমনই এক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে অসমে।
অসমের গুয়াহাটির বাসিন্দা বিটুপন তামুলী। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর প্রেম প্রার্থনা বোরার সঙ্গে। ২৭ বছর বয়সি বিটুপনের বাড়ি অসমের মরিগাঁওয়ে। প্রার্থনার বয়স হয়েছিল ২৫। তিনি চাপারমুখের কসুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। প্রার্থনা বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ হয়ে অসমের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শুক্রবার অসুস্থতার কারণে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে প্রার্থনার। সব্যসাচীর মতো পরিণতি পায়নি বিটুপনের ভালবাসাও।
কিন্তু প্রার্থনার মৃত্যুর পর অসম শহর যা দেখল তাতে চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এসেছে অনেকেরই। গত শনিবার যুবতীর শেষকৃত্যের আগে তাঁকে দেখতে তাঁর বাড়ি এসেছিলেন প্রেমিক। প্রার্থনার মৃত্যুর পর তাঁর দেহের সামনে বসে হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করেন বিটুপন। একটু সামলিয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যান তিনি। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে আসেন বিয়ের সরঞ্জাম নিয়ে। সিঁদুর-মালা হাতে প্রার্থনার দেহের সামনে বসে পড়েন বিটুপন। কান্না থামিয়ে দৃঢ় মুখে প্রার্থনার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন তিনি। এর পর গালে সিঁদুর লাগিয়ে প্রার্থনার গলায় মালাও পরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: Haami 2 Trailer: বড়দিনে আসছে ‘হামি ২’, দেখুন ট্রেলার
প্রার্থনার হাতে ছুঁইয়ে নিজেও একটা মালা পরে নেন বিটুপন। বিয়ের প্রাথমিক আচার -অনুষ্ঠান শেষ করে স্পষ্ট ভাষায় জোরে জোরে চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই জন্মে আমি আর কাউকে বিয়ে করব না।’’ এই কথা শুনে উপস্থিত সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিটুপন-প্রার্থনার এই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
যদিও নেটিজেনদের একটি বিরাট অংশ এই ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করছেন যে এই ভিডিয়োতে থাকা যুবকটি হলেন সব্যসাচী, ও যার মৃতদেহটি শায়িত অবস্থায় রয়েছে তিনি ঐন্দ্রিলা। উদাহরণস্বরূপ, একজন এই ভিডিয়োটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ভালোবাসার শেষ অধ্যায় এ এসেও সব্যসাচী প্রমান করে দিল তার ভালোবাসা কতটা নিখুঁত ছিল সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে!! হ্যাঁ এটাই ভালোবাসা। অনেক পরের জন্মেও তুমি সব্যসাচীর ঐন্দিলা হয়েই এসো। ভালোবাসা, ভালো থেকো না ফেরার দেশে।” কিন্তু ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি মিথ্যে। এই ভিডিয়োতে সব্যসাচী বা ঐন্দ্রিলা, কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হচ্ছে তা অসমের ঘটনা।
আরও পড়ুন: Sabyasachi Chowdhury: না ফেরার দেশে ঐন্দ্রিলা, শোকার্ত সব্যসাচী ছাড়লেন ফেসবুক