India's Mango Man, Father Of 300 Varieties Including "Sachin", "Aishwarya", "Modi", "Sonia"

Kaleem Ullah Khan: একটি গাছে ৩০০ প্রজাতির আম! ফলে ‘ঐশ্বর্য’, ‘সচিন’ ‘মোদী’, ‘সনিয়া’

প্রতি দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়েন কলিমউল্লাহ খান। প্রার্থনা সেরে প্রায় দেড় কিমি দূরে পাড়ি দেন অশীতিপর বৃদ্ধ। সেখানেই রয়েছে তাঁর ‘প্রাণভোমরা’। একটি ১২০ বছরের আম গাছ। শত বসন্ত পার করা এই আম গাছটিকে প্রাণ দিয়ে আগলে রেখেছেন কলিমউল্লাহ। শুধু তাই নয়, এই গাছে বছরের পর বছর ধরে প্রায় ৩০০টি আলাদা আলাদা প্রজাতির আম উৎপাদন করেছেন তিনি।

মালিহাবাদে রয়েছে তাঁর এই সাধের আমের বাগান। তিনি বলছেন, ‘গত কয়েক দশক ধরে প্রখর রোদে পুড়ে কঠোর চাষের পুরস্কার এগুলি।’ তাঁর কথায়, ‘খালি চোখে এগুলিকে শুধুমাত্র গাছ মনে হতে পারে। যদি মনের দূরবীন দিয়ে দেখেন এটি গাছ, ফলের বাগাম এবং বিশ্বে বৃহত্তম আমের কলেজ এটি।’ পড়াশোনায় তেমন মন ছিল না। তাই ছেড়ে দিয়েছিলেন স্কুল। কিশোর বয়সেই শুরু করেন আম নিয়ে গবেষণা। নতুন ধরনের আম তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের গাছ একসঙ্গে করলেন। তিনি একটি গাছ বানিয়েছিলেন যেখানে সাত ধরনের নতুন ফল হতে পারে। কিন্তু ঝড়ে তাঁর সাধের সেই গাছ নষ্ট হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: Bizarre Disease: গোপনাঙ্গ থেকে বেজেই চলেছে বাঁশি! আজব অসুখে চরম বিপাকে বৃদ্ধ

তবে ১৯৮৭ সাল থেকে তাঁর অন্যতম সঙ্গী হয়ে ওঠে ১২০ বছরের পুরনো একটি নমুনা বা আম গাছ। এই গাছ থেকে তিনি ৩০০ বিভিন্ন ধরনের আমের ফলন করেছিলেন। প্রতিটি আমেরই রং, আকার, স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন। আমের যেমন ভিন্ন ধরন রয়েছে। সেরকমই রয়েছে ভিন্ন নামও। তিনি তাঁর প্রথম আবিষ্কার করা আমের নাম রেখেছিলেন ঐশ্বর্য। বিশ্ব সুন্দরী তথা বলিউড অভিনেত্রীর নামে আম এখনও পর্যন্ত তাঁর ‘সেরা আবিষ্কার’। খান বলেছেন, ‘এই আমটি সেই অভিনেত্রীর মতোই সুন্দর। একটি আমের ওজন এক কেজিরও বেশি।এর বাইরের রং ক্রিমসন। স্বাদে খুব মিষ্টি।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সচিন তেন্ডুলকারের নামেও আমের নাম রেখেছেন কলিমউল্লাহ। তালিকায় রয়েছেন সনিয়া গান্ধী, অমিত শাহ এবং অখিলেশ যাদবের নামও। তিনি জানান, মানুষ নশ্বর। কিন্তু আম চিরকালীন। মানুষ যখনই ‘সচিন’ আম খাবে, তখনই তাঁরা ক্রিকেটার সচিনকে মনে করবেন।

দ্বিস্তর শাঁসযুক্ত ‘আনারকালি’ আম-ও উৎপাদন করেছেন কলিমউল্লাহ। সেই আমের দু’টি স্তরের স্বাদ এবং গন্ধ আলাদা। কলিমউল্লাহ গর্বের সঙ্গে দাবি করেছেন, তিনি চাইলে মরুভূমিতেও আম চাষ করতে পারবেন। তবে তিনি যেখানে আম চাষ করেন সেই জায়গা থেকে ভারতের সব থেকে বেশি আমের উৎপাদন হয়। মলিহাবাদে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জায়গা জুড়ে আমের বাগান রয়েছে। ভারতের মোট আমের উৎপাদনের প্রায় ২৫ শতাংশ এখান থেকেই হয়।

তবে জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলিমউল্লাহ। তাঁর দাবি, বছরের পর বছর ধরে জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য আম উৎপাদনের উপর যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। আমের উৎপাদন কমেছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। উদ্যান চাষে অনবদ্য অবদানের জন্য ভারত সরকার কলিমউল্লাহকে ২০০৮ সালে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী’ প্রদান করে।

আরও পড়ুন: Ants: সোনার হার ‘পাচার’ করল পিঁপড়ের দল! ভিডিও দেখে অবাক নেটিজেনদের