তৃণমূল এবার ৬টি কেন্দ্রেই জয় পেয়েছে। কিন্তু মাদারিহাট যেন তৃণমূলকে বাড়তি আনন্দ দিল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, মাদারিহাটের মানুষকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, প্রথমবার এই কেন্দ্রে আমাদের জেতানোর জন্য।
মাদারিহাট। বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বিধানসভা কেন্দ্রে কিছুতেই খাতা খুলতে পারত না তৃণমূল। নানাভাবে চেষ্টা করেছে তৃণমূল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। তবে এবারের উপনির্বাচন যেন সব কিছুকে একেবারে ওলটপালট করে দিল। মাদারিহাট হাতছাড়়া হল বিজেপির। এই কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছে ৩৪.৮৩ শতাংশ ভোট। গত লোকসভা ভোটের তুলনায় বিজেপি এবার ১৫ শতাংশ কম ভোট পেয়েছে। এই কেন্দ্রে পরাজয় বিজেপির কাছে যথেষ্ট অস্বস্তির।
বিজেপির দুর্গ মাদারিহাটে পদ্মপ্রার্থীকে কেন হারতে হল উপনির্বাচনে, এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দলকে রিপোর্ট দিতে হল আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গাকে । এদিকে মাদারিহাটে কান পাতলেই এখন শোনা যাচ্ছে, জন বনাম মনোজ টিগ্গার লড়াইয়ের কথা। কার্যত মনোজ টিগ্গাকে জব্দ করতেই এবার ময়দানে নেমে পড়েছিলেন জন বার্লা। কখনও প্রকাশ্যে। কখনও আড়ালে। আর ভোট মিটতেই জন বার্লা বলছেন, ওয়ান ম্যান আর্মির মতো দল চালানো হচ্ছে আলিপুরদুয়ারে। চা বাগানে নেতাদের গুরুত্ব দেয় না। কলকাতায় বসে, দিল্লিতে বসে, দল চালায়। কলকাতায় বসে দল চালালে এটাই হয়। জেলা সভাপতি, রাজ্য সভাপতির সিদ্ধান্তের কারণেই এমন হার হল।
শনিবার রাজ্যের ছয় বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় পেয়েছে তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে এই ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়কেরা সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় এই উপনির্বাচন হয়। এই ছ’টি আসনের মধ্যে কেবলমাত্র মাদারিহাট ছিল বিজেপির দখলে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রবল ঝড়ে বিজেপি যে তিনটি আসনে জয় পেয়েছিল, তার একটি ছিল মাদারিহাট। সে বার খড়্গপুর সদর আসনে বিজেপির তৎকালীন সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বৈষ্ণবনগরে স্বাধীন সরকারের সঙ্গে মাদারিহাট থেকে ভোটে জিতে বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন বর্তমানে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ওই আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, সাংসদ মনোজই বর্তমানে বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি। তাই এই হারে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাঁর নেতৃত্ব।