মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সুশান্ত। বুধবার সাজা নিয়ে চলে সওয়াল-জবাব পর্ব। বৃহস্পতিবার ফের বহরমপুর আদালতে তোলা হয় সুশান্ত চৌধুরীকে। এদিন তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনান বিচারক সন্তোষ পাঠক। ২০২২ সালের ২ রাতে মেসে ফেরার পথে প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে খুন হয়ে যান সুতপা। বহরমপুরের সুইমিং ক্লাবের গলিতে প্রাকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল সুতপাকে। ঘটনার বিভৎসতা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে।
পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেতে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে গিয়েছিল সুশান্ত। ঘটনার ৩৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। তারপর থেকে চলছিল মামলা। নেওয়া হয় ৩৪ জনের সাক্ষী। অবশেষে ১৬ মাসের মধ্যে এল আদালতের রায়।
সুতপা হত্যাকাণ্ডে (Sutapa murder case) মঙ্গলবারই সুশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বুধবার সাজা হওয়ার কথা থাকলেও তা একদিন পিছিয়ে দেন হরমপুরের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক। শাস্তি নিয়ে শুনানি চলাকালীন সুশান্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আর্জি জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী (verdict)। অন্য দিকে, সুশান্তর আইনজীবীরা দাবি করেন, আবেগের বশে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তাঁর মক্কেল। তাঁর বয়স কম। তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হোক। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হবে বলে জানান বিচারক।চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বিচারক সুতপার প্রেমিক সুশান্তকে কী সাজা দেন, তা জানতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। শেষপর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা ও অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে দোষীকে ফাঁসির সাজা দেন বিচারক।
গত বছরের ২ মে বহরমপুর শহরের গোরাবাজারে একটি মেসের সামনে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় সুতপাকে। তারপরেই খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয় সুতপার প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। শুধু সুতপার পরিবার নয়, সুশান্তর কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায় বাকরূদ্ধ গোটা বহরমপুরের মানুষ।
ওইদিন সন্ধ্যায় এক বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন সুতপা। সিনেমা দেখে ফেরার সময় সুতপার পিছু নিয়েছিল তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত। মেসের সামনে আসতেই ছুরি নিয়ে সুতপার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। সেই খুনের ছবি ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়। অভিযুক্ত সুশান্তকে খুনের পর পালাতে দেখেছিলেন যে দুই সাক্ষী, তাঁরা জানান, খুনের পর পাঁচিল টপকে পালিয়েছিল সুশান্ত। সরকারি আইনজীবীরা আদালতে জানান, সুতপার দেহে ৪২ টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা সুতপাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে তাদের খুনের হুমকি দেয় সুশান্ত।