ভারতের নাগরিকেরা বিজেপির হিন্দুরাষ্ট্রের আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বার অমর্ত্য বললেন ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা থেকে কিছুটা আটকানো গিয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান বদল করতে যে যে আলোচনার প্রয়োজন ছিল, তা করা হয়নি।’’
প্রতীচী ট্রাস্টের তরফে প্রায় প্রতি বছরই একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়। এ বার সেই আলোচনাচক্রের বিষয় ছিল, ‘কেন স্কুলে যাই: সহযোগিতার সহজ পাঠ’। শনিবার বোলপুরে জামবুনির একটি বেসরকারি ভবনে এই শীর্ষক আলোচনা সভায় অন্যতম বক্তা এবং শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। প্রতীচী ট্রাস্টের মানবী মজুমদার, সৌমিক মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) বলেন, “এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্তু ভারতকে কি করে হিন্দু রাষ্ট্র করা যায়? জানা দরকার, স্কুলের কচিকাঁচাদের কাছে হিন্দু-মুসলিমের কোনও পার্থক্য নেই। তাই দেশে লোকসভা নির্বাচনে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা থেকে আটকানো গেল।”
ফৈজাবাদ লোকসভার কেন্দ্রের ফলের প্রসঙ্গ টেনে এনেও বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘‘ওরা এটা মানতে পারল না যে, যেখানে বড় মন্দির তৈরি হল, সেখানে এক জন সেকুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) দলের প্রার্থী, হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘দেখুন, ভারত একেবারেই ধর্মনিরপেক্ষ দেশ নয়। তবে বহু ধর্মের দেশ তো বটেই।’’
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও আক্ষেপ করেন অধ্যাপক সেন৷ তিনি জানান, বুদ্ধদেবের থেকে নানা কিছুর শেখার আছে। নালন্দায় সেই সমস্ত নতুন করে করা হয়নি ৷ আগের সরকার আর বর্তমান সরকার করেনি। পাশাপাশি, বেকার সমস্যা, সমাধানের পথ, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক পরিকাঠামো নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন অধ্যাপক সেন।