২৯ বছর একসঙ্গে কাটিয়েছেন। স্ত্রীর চলে যাওয়াটা তাই মানতে পারেন না বর্ষীয়ান চিকিৎসক। স্ত্রীর কথা মনে রেখে মন্দির গড়ে সেখানেই বসিয়েছেন তাঁকে। দেবীর মতোই সেখানে পুজো পান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ভবতোষ বিশ্বাসের স্ত্রী মিলি বিশ্বাস।
নামী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তিনি। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন দীর্ঘদিন। রোগমুক্তির পর বহু মানুষ তাঁকে ঈশ্বর জ্ঞান করেন। সেই ভবতোষবাবুই স্ত্রীর স্মৃতিতে মন্দির তৈরি করেছেন কোন্নগরের এসি দেব স্ট্রিটের বাড়ি লাগোয়া এলাকায়। মন্দিরের প্রথম তলায় রয়েছে তার স্ত্রীর মূর্তি। সঙ্গে দেবী দুর্গা। ওই মন্দিরে বিরাজ করেন রাধাকৃষ্ণ, জগন্নাথদেব, রামকৃষ্ণ-মা সারদা। নিত্যপুজো হয়। নিষ্ঠার সঙ্গে পুরোহিতরা একদিকে যেমন দেবী দুর্গা, মা কালীর পুজো করেন ঠিক তেমনি নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো পান চিকিৎসকের স্ত্রী মিলি।
দেবী জ্ঞানে মা সারদাকে পুজো করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণদেব। মমতাজের স্মৃতিতে তাজমহল তৈরি করেছিলেন শাহজাহান। সে দুটো প্রসঙ্গই এসেছিল অনিবার্যভাবে। ভবতোষবাবু বলেন, “আমি শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ভক্ত। পরমহংসদেব ঈশ্বর। ওনার সঙ্গে আমার কোনও তুলনাই হতে পারে না। অন্যদিকে শাহজাহান সম্রাট। তাঁর ক্ষমতা-অর্থবল-লোকবলের ধারেকাছেও আমি নেই। যেটা করেছি তার পুরোটাই স্ত্রীর প্রতি আমার স্নেহ ও ভালবাসার প্রকাশ। দীর্ঘ ২৯ বছর আমাকে সবদিক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন আমার স্ত্রী। বিশ্বাস করি, এখনও ও আছে আমার পাশেপাশেই।” পরোপকারি মহিলা ছিলেন তাঁর স্ত্রী মিলি। মহিলাদের অগ্রগতির জন্য জীবন দিয়ে কাজ করে গেছেন। কোনও মহিলা সমস্যা নিয়ে এলেই তার সমাধান করার চেষ্টা করতেন।