The News Nest: ফোন করে ডেকে রাস্তায় প্রেমিকাকে এলোপাথাড়ি কোপ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু তরুণীর(Murshidabad Murder Case)। হাড়হিম করা ঘটনার সাক্ষী মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদ থানা এলাকা। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রণয়ঘটিত কারণে খুন বলেই অনুমান তদন্তকারীদের।
সাবিয়া খাতুন, মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের বাসিন্দা। এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা।
কম্পিউটার ক্লাস শেষে শনিবার বাড়ি ফিরছিলেন সাবিয়া। সঙ্গে ছিল তাঁর বান্ধবীরা। শোনা যাচ্ছে, মিঠু শেখ নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সাবিয়া। শনিবার সাবিয়াকে তাঁর প্রেমিক ফোন করে ডাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগে তরুণীকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দিতে শুরু করে বলেই অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন সাবিয়া।
এই ঘটনায় ফিরল বছর দুয়েক আগে বহরমপুরের কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি। উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ২ মে বহরমপুরে একটি মেস বাড়ির সামনে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে খুন করে তাঁর প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। ৪২ বার ছুরি দিয়ে কোপানো হয় সুতপাকে। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
চিৎকার চেঁচামেচি শুনে জড়ো হয়ে যান স্থানীয়রা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করা হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দৌলতাবাদ থানার পুলিশ। অভিযুক্ত মিঠু শেখকে গ্ৰেপ্তার করা হয়। প্রেম সংক্রান্ত বিবাদের জেরে খুন বলে অনুমান পুলিশের। তরুণীর পরিবারের দাবি, মানসিক অবসাদের জেরে ওই যুবক এই কাজ করেছে।
মায়ের দাবি, শনিবার ঘুম থেকে ওঠার পর ছেলের আচরণে কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল না। এমনকি, দুপুরে খাবার খেয়েছেন পরিপাটি করে। খেয়ে উঠে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মিঠু শেখ। কিন্তু ঘণ্টাখানেক বাদে হন্তদন্ত হয়ে মিঠু যে ভাবে ছুটে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন, সে ছেলেকে চিনতেই পারছিলেন না মজিদা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘রক্তমাখা ছিল ওর হাত। আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘আমি ওকে শেষ করেছি।’’’
অভিযুক্তের মায়ের সাফাই, ওই নাবালিকার সঙ্গে একাধিক ‘ছেলে’র সম্পর্ক ছিল। তাঁর ছেলে বার বার নাকি নিষেধ করেন। কিন্তু মেয়েটি শোনেনি। তার জন্য খুন? মজিদার জবাব, ‘‘আমি ছেলেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলাম ওই সম্পর্ক থেকে। কিন্তু ওই মেয়েই ওকে ছাড়েনি। এখন ওকে লুকিয়ে অন্য জনের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ও তো মরলই। আমার পরিবারটাকেও শেষ করে গেল।’’
মৃতার দাদা সেলিম রেজার অভিযোগ, তাঁর বোনকে খুনের পরিকল্পনা করেই ডেকে নিয়ে গিয়েছিল মিঠু। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে পরিকল্পনা করে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার বোনকে মিঠু খুন করেছে, তাতে ওর কঠিনতম শাস্তি হোক। রাজনৈতিক কিংবা আর্থিক প্রভাবে ও কোনও ভাবেই যেন ছাড় না পায়।’’