3 people died by suicide on facebook live in Bakkhali

আর্থিক ‘তছরূপে’র দায়ে তরুণীকে যৌন হেনস্তা, অপমানে ফেসবুক লাইভে আত্মঘাতী বাবা-মা-ভাই

দিদির বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ। সে কারণে তাঁর উপর চলে বেধড়ক মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার। ওই মহিলার যৌনাঙ্গে বাঁশ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তা সহ্য করতে পারেননি। আর সেকথা ফেসবুক লাইভে জানিয়ে একে একে আত্মঘাতী যুবক ও তাঁর বাবা-মা। এখই পরিবারের তিন সদস্যের আত্মহত্যার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় মৃতদের নাম শ্যামল নস্কর (৫৩), রীতা নস্কর (৪৩) এবং অভিষেক নস্কর (২৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিনে আগেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে ডায়মন্ড হারবার থানার সুলতানপুরের বাসিন্দা পুনম দাস নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে।

পুনমের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে তার। একটি বেসরকারি ঋণদানকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তরুণী। তাঁর দায়িত্ব ছিল ওই গোষ্ঠীর মাধ্যমে যাঁরা ঋণ নিতেন, সেই টাকা তুলে তা ব্যাংকে পৌঁছে দেওয়া। অভিযোগ, এই কাজ ঠিকমতো করেননি ওই তরুণী। তিনি আত্মসাৎ করছিল ওই টাকা। তা নিয়ে অশান্তি চলছিল। অভিযোগ, শনিবার রাতে বেশ কয়েকজন টাকার দাবিতে তরুণীর বাপের বাড়িতে হানা দেয়। সেই সময় তিনি বাপের বাড়িতেই ছিলেন। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: বিজেপি-তে ফের ‘হোয়াটসঅ্যাপ বিদ্রোহ’, গ্রুপ ছাড়লেন আরেক বহুচর্চিত নেতা

আরও দাবি, ওই তরুণীর যৌনাঙ্গে বাঁশ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ভাগ্নের উপরেও চলে অত্যাচার। পুনমের সামনেই তাঁর বাবা শ্যামল, মা রীতাকে চূড়ান্ত অপমান করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। তাঁদের মারধর করা হয়। হুমকিও দেওয়া হয়। শনিবার রাতেই কুলপি থানায় অভিযোগ দায়ের করে নস্কর পরিবার।

রবিবার সকালে বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান বকখালিতে ওই যুবক। বনবিবির মন্দিরের পিছনের একটি জঙ্গলে গা ঢাকা দেন তিনজনেই। এরপর রবিবার দুপুরে ওই জঙ্গল থেকেই ফেসবুক লাইভ করেন যুবক। বেসরকারি ঋণদানকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। মিথ্যে অভিযোগে তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।

ফেসবুক লাইভ চলাকালীন একের পর এক জঙ্গলের গাছে গলায় দড়ি দিতে শুরু করেন ওই যুবক এবং তাঁর বাবা, মা-ও। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। জঙ্গল থেকে তিনি দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ফেসবুক লাইভে উল্লেখ করা প্রত্যেকটি তথ্য সত্যি কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুনম ও মিঠুন দাসকে আটক করেছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। পুনমের বাড়িতে এসে হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত পাঁচ মহিলাকেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ডায়মন্ড হারবার থানা সূত্রে।

আরও পড়ুন: দুঃস্থদের দুয়ারে খাবার, ওষুধ দেওয়ার নির্দেশ নবান্নের, সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে নজরদারির নির্দেশ