আবারও চর্চায় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস। সংস্থার সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডিরেক্টরদের সম্পত্তির বিবরণ চেয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এক্ষেত্রে যে বিবরণ আদালতে জমা পড়েছে তাতে সন্তুষ্ট নন বিচারপতি সিনহা। বেশ কিছু বিষয় এখনও বিচারপতির কাছে স্পষ্ট হয়নি। সেই কারণে মামলার সঙ্গে যুক্ত ইডি ও সিবিআইয়ের সব আধিকারিককে আজ বিকেলেই আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা।
অভিষেক-সহ লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সিইও এবং ডিরেক্টরদের সম্পত্তির বিবরণ ইডিকে জমা দিতে বলেছিল হাই কোর্ট। সেই বিবরণ নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সিনহা। বিবরণে অভিষেকের কোনও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট জানায়নি ইডি। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘এটা কি হতে পারে? সাংসদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই? তা হলে তিনি বেতন পান কী ভাবে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিষেকের বাড়ির ঠিকানা জানে না ইডি? ১৮৮এ হরিশ মুখার্জি রোডে কার নামে বাড়ি রয়েছে?’’
এখানেই থামেননি বিচারপতি। সোমবার তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘অভিষেক লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার যে সিইও, তাঁর কী সম্পত্তি দেখানো হয়েছে? আপনারা যে তথ্য দিয়েছেন, তা কি বিশ্বাসযোগ্য?’’ ইডি অভিষেকের সম্পত্তির যে বিবরণ দিয়েছে, তাতে তাঁর মালিকানাধীন জমি দেখানো হয়েছে। এই জমি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা অভিষেকের জমি দেখাচ্ছেন? তার বিশদ তথ্য কোথায়? কোথায় রয়েছে জমি? জমির কত দাম, কিছু জানাননি? আপনাদের এই তদন্তের হাল? আপনারা যে নথি দিচ্ছেন, তা সত্য কি মিথ্যা যাচাই করেননি। কোন এলাকায় জমি তাও যাচাই করেননি।’’
আরও পড়ুন: Weather Update: শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ! কতদিন চলবে বৃষ্টি? রইল পূর্বাভাস
ইডির তদন্তে জানা গিয়েছে, লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার একটি কারখানা ছিল। বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সেই কারখানার বিষয়েও বিশদে কিছু জানায়নি ইডি। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা বলছেন, সংস্থার কারখানা ছিল? তা কবে, কোথায় তৈরি হয়েছে, জানাননি। সংস্থার সম্পত্তির বিবরণ দেননি। আপনারা জানিয়েছেন, সংস্থার এসি রয়েছে, গাড়ি রয়েছে, লরি রয়েছে। কিন্তু কার নামে সেই গাড়ি, লরি, কিছুই জানাননি।’’ এর পরেই বিচারপতি কড়া সুরে বলেন, ‘‘আপনারা কি সঠিক ভাবে তদন্ত করবেন না? সংস্থার ৬ জন ডিরেক্টর রয়েছেন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া কারও বিরুদ্ধে কি কোনও তদন্ত করেছেন? সুজয়ের গলার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তা কি তদন্ত করে দেখেছেন?’’
ইডির বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর নিখিলেশকুমার মিশ্রের বিরুদ্ধেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সিনহা। তিনি বলেন, ‘‘আপনি কি তদন্ত থেকে অব্যাহতি চান? এটা কি পোস্ট অফিস? কেউ কিছু দিল, এসে প্রকাশ করলেন! কার কত সম্পত্তি কিছু দেখলেন না?’’ বিচারপতি জানিয়েছেন, ওই সংস্থা প্রথমে কেন তৈরি করা হয়েছিল, তা জানায়নি ইডি। বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছে বলেছে ইডি। কিন্তু সেই লেনদেন নিয়েও কিছু জানায়নি। ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি জানিয়েছেন, ‘টানেলের শেষে’ কবে পৌঁছনো যাবে? তাদের কি কারও সাহায্যের প্রয়োজন? ইডির তরফে জানানো হয়েছে, তাদের লোক কম। ফিনানশিয়াল ইন্টালিজেন্স ইউনিটের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। তবে ইডির আইনজীবী এখনই এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বিচারপতিকে অনুরোধ করে বলেন, ‘‘একটু সময় দিন। ইডির ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি, কার সাহায্য নেওয়া যায়।’’
আরও পড়ুন: Dengue: বৃষ্টির জেরেই বাড়তে পারে ডেঙ্গি, ৪ জেলায় চিহ্নিত হল একাধিক ‘হটস্পট’