জল্পনাই সত্যি হল অবশেষে , আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নন অধীর চৌধুরী।
লোকসভা ভোটে তাঁর পরাজয় বাংলার রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। জল্পনা ছিল, এবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হতে পারে অধীর চৌধুরীকে। শুক্রবার বিধানভবনে ভোটে দলের ফলাফলের পর্যালোচনায়, কংগ্রেসের কর্মসমিতির বর্ধিত বৈঠক বসেছে। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী বরাবর সিপিএমের সঙ্গে জোটের পক্ষে। অভিযোগ, লোকসভা ভোটেও একপেশেভাবে শুধু উত্তরবঙ্গের কথা এবং নিজের জেলার কথা মাথায় রেখে বামেদের সঙ্গে জোট করেছেন অধীর (Adhir Ranjan Chowdhury)। দক্ষিণবঙ্গের কথা ভাবা হয়নি। জেলা সভাপতিদের কথা শোনা হয়নি। প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীরের কাছে সেই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন ব্লক এবং জেলা নেতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সিপিএমের (CPIM) সঙ্গে জোট নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে। এই সিদ্ধান্ত কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী জানান, তিনি আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নন। তিনি অস্থায়ী সভাপতি। তাঁর কথায়, “আমি তো এমনিতেই অস্থায়ী সভাপতি। অস্থায়ী সভাপতি হিসাবে আমি কাজ চালাচ্ছিলাম। খাড়গেজি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সর্বত্র তাই হয়েছে। সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীকেও জানিয়েছি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে হবেন, নাম চূড়ান্ত করবেন মল্লিকার্জুন খাড়গে-ই।” যদিও সূত্রের খবর, অধিকাংশ কংগ্রেস নেতা আবারও অধীর চৌধুরীকেই চেয়েছেন সভাপতি হিসাবে। ৭ জন সর্বক্ষণের সভাপতি হিসেবে অধীর চৌধুরীকে চেয়েছেন। তবে নতুন কমিটিতে কী হবে, কারা আসবেন সবটাই এবার খাড়গে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেসের ভোট পর্যালোচনা বৈঠকে মূলত দুটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। প্রথমটি, রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) বিরোধী দলনেতা করার প্রস্তাব। যা পেশ করেন রাজ্যে দলের একমাত্র সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী। ঈশাকে এদিন সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল, প্রদেশ কংগ্রেসে রদবদলের দাবিতে। দ্বিতীয় এই প্রস্তাবটিই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রভাবশালী মুখ আবদুস সাত্তার এই প্রস্তাব পেশ করেন। সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দৌড়ে ইশা খান চৌধুরী ও প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম উঠে আসছে। এদিনের বৈঠকে ইশাকে ঘিরে দলীয় কর্মীদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।