গত নভেম্বরে রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপিকে ৩৫টি আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়েছিলেন। সন্দেশখালি কাণ্ডের পর অবশ্য বারাসতের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, “৪২ এ ৪২ চাই।”
গত বছর এপ্রিল মাসে সিউড়িতে সভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumder) পাশে বসিয়ে প্রকাশ্য সমাবেশে বাংলা থেকে বিজেপি ৩৫ আসন পাবে বলে দাবি করেন। কিন্তু শাহর দাবি কি আদৌ বাস্তবসম্মত? সেটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয় গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই। অভিযোগ ওঠা শুরু করে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। রাজ্য থেকে যে রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠানো হচ্ছে তাতে ব্যাপক জল মেশানো।
শাহও সম্ভবত সেটা বুঝতে পারেন। সেকারণেই নিজের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনেন তিনি। কিছুদিন আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বলেন, এ রাজ্যে অন্তত ২৫ আসন পাবে বিজেপি। অর্থাৎ প্রথমে তিনি যে টার্গেট বেঁধে দিয়েছিলেন সেটার চেয়ে ১০ আসন কম।
বুধবার বালুরঘাটের সভা থেকে আবার নয়া টার্গেট দিলেন শাহ। বললেন, “এবারে বিজেপির আসন ১৮ থেকে বাড়িযে ৩০ করতে হবে!” অসমের উদাহরণ টেনে শাহ বলেন, “অসমে অনুপ্রবেশ খতম করেছে। বাংলায় লোকসভা ভোটে ৩০ আসন পেলে এখানে সীমান্ত টপকে কোনও ‘পরিন্দা’ও ঢুকতে পারবে না।” কেন ৩০টি আসন দরকার তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত বলেন, “সারা দেশে বিজেপির ৩৭০টি আসন নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য বাংলা থেকে ৩০ টি আসনে জিততে হবে।”
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে মাত্র ২টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। ঊনিশের লোকসভা ভোটে এক ধাক্কায় সেই সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছিল ১৮টি তে। এবারের লোকসভা ভোটে ওই সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ভোট ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোট যত এগিয়ে আসছে গেরুয়া শিবিরের টার্গেটের সংখ্যা কেন কমছে তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের দাবি, লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, বিজেপির এই সম্ভাব্য আসন সংখ্যা ততই কমতে শুরু করবে! যদিও গেরুয়া শিবিরের পাল্টা দাবি, সাংগঠনিক ক্ষমতার ভিত্তিতে ফলাফলের ন্যূনতম সংখ্যাটাই উনি বলেছেন।