রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে শপথ নিয়েই বাংলা ভাগের দাবি করলেন বিজেপির নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজ (Ananta Maharaj)। যা নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। দলের রাজ্যসভার (Rajya Sabha) মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় সাফ জানিয়েছেন, বিজেপি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করলেও তাদের বাংলা ভাগের চক্রান্ত সফল হবে না। তবে অনন্ত মহারাজের এই দাবি ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি (BJP)। উত্তরবঙ্গে ভোট ভাগের আশঙ্কা করছে গেরুয়া শিবির।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, সোমবার বাংলা ও গুজরাট থেকে নির্বাচিত ন’জন সাংসদ শপথ নেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাঁচ তৃণমূল সাংসদের পাশাপাশি শপথ নেন বিজেপির অনন্ত মহারাজ। এরপরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গকে লাগাতার বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তিনি অবিলম্বে গ্রেটার কোচবিহারকে আলাদা রাজ্যের স্বীকৃতির দাবি তোলেন৷ তাঁর কথায়, ‘গ্রেটার কোচবিহারকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি নতুন নয়৷ শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, অসম, বিহারের বেশ কিছু অংশেও একই দাবি উঠেছে৷ অবিলম্বে গ্রেটার কোচবিহারকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হোক৷’
যদিও তাঁর এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়৷ তাঁর অভিযোগ, ‘গত এক দশকে বারবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত এবং পুরসভার ভোটে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পরে বাংলা, বিহার, অসমকে ভাগ করার জন্য বিজেপি কুপরিকল্পনার মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে৷ বাংলার মানুষ বিজেপির এমন জঘন্য চক্রান্ত সফল হতে দেবে না৷’
কোচবিহারকে যে তিনি বাংলার অংশ বলে মানেন না, তা এদিন স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিলেন অনন্ত মহারাজ। এ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, “বাংলা ভাগ করার কথা উঠছে কেন? কোন বাংলা ভাগ করতে চাইছে বলছে, আমি তা জানি না। কোচবিহার একটা রাজ্য। ওটা যাতে ফের পুনর্গঠন করা যায় তার জন্য বলছি। গ্রেটার কোচবিহারের কথা বলছি, ১৯৪৭ সালে ১৮ জুলাই যেটা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিল পাস হয়, ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স অ্যাক্ট যেটা হয় তাতে একটা ধারা আছে সেভেন ওয়ান-বি। সেখানে আমাদের মহারাজের কাছ থেকে যে সমস্ত জমি ব্রিটিশরা দখল করেছে, সেই চুক্তি সমাপন করে মহারাজাকে সব ফেরত দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকেই কোচবিহার গ্রেটার কোচবিহার হয়েছে। সেটাই আমরা আবার গঠন করতে বলছি ভারত সরকারকে।”
সোমবার রাজবংশী উষ্ণীষ-সহ সাদা পোশাকে হিন্দিতে শপথ গ্রহণ করেছেন অনন্ত। তিনি বাঙালি নন, তাই বাংলায় শপথ নেননি বলেও জানিয়েছেন। এদিন এ বিষয়ে পরে সুখেন্দু জানান, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এখনও যা জানা গিয়েছে, তাতে মহারাষ্ট্রে বিদর্ভ, গুজরাতের সৌরাষ্ট্র, অসমে বোড়োল্যান্ড এবং কার্বি আংলং, উত্তরপ্রদেশে বুন্দেলখণ্ড এবং পশ্চিমাঞ্চল বা হরিৎ প্রদেশের মতো ২০টি নয়া রাজ্য গড়ার দাবি উঠেছে। তা হলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সব ছেড়ে কেন শুধু বাংলা ভাগ নিয়ে পড়েছে? বাংলার পুণ্যভূমিতে কার্জনের প্রেতাত্মা আর পৈশাচিক বিজেপি সরকার ফের পরাজিত হবে। লক্ষ লক্ষ ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, মাস্টারদা এবং মাতঙ্গিনী দিল্লির শাহেনশাহদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত।”
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: প্যাংগং হ্রদের তীরে পিতা রাজীবকে শ্রদ্ধা রাহুলের, মিথ্যে বলার জন্য তোপ মোদীকে