গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দীর্ঘ প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় থেকে তিহারে জেলবন্দি। কালীপুজোতেও তাঁর জেলবন্দি দশা কাটার আশা দেখছেন না অনুগামীরা। ফলে, এ বারও বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজো হবে আড়ম্বরহীন।
গত বছরেও নমো নমো করে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজো সারা হয়েছে। এ বার শ্যামাপুজোর জৌলুস কমল আরও। কালীর অঙ্গে সোনার বদলে উঠল ইমিটেশনের গয়না। ২০২১ সালের কালীপুজোয় তো প্রতিমার অঙ্গ ৫৬০ ভরি সোনার গয়না দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিলেন অনুব্রত। শোনা যায়, ওই গয়নার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল আড়াই কোটি টাকার উপরে। তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করেছিলেন বিরোধীরা। বিপুল অলঙ্কারে সজ্জিত প্রতিমা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু এ বার সে সব ফিকে। পরিস্থিতি এমন যে, আগে থেকে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না সেখানে। তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘গত বছর মায়ের গায়ে কিছু সোনার গয়না পরানো হয়েছিল। তবে এ বছর মায়ের গায়ে শুধু ইমিটেশনের গয়নাই থাকবে।’’
২০২২ সালের ১১ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এরপর থেকে কার্যত জৌলুস হারিয়েছে বোলপুরের তৃণমূল জেলা কার্যালয়ের কালীপুজো। ১৯৮৮ সালে এই কালীপুজো শুরু করেছিলেন স্বয়ং অনুব্রত। পরে এই পুজোর জাঁকজমক বাড়তেই থাকে। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভেবেছিলাম এই বছর কেষ্টদা ফিরে আসবেন। ধুমধাম করে এই পুজো হবে। কিন্তু, তা আর হল না। পুজো হবে ঠিকই। পার্টি অফিসের ছেলেরা গতবারের মতোই চাঁদা তুলে পুজো করবে। যাঁরা আসবেন তাঁদের প্রসাদও বিতরণ করা হবে। তবে কোনও বিপুল আয়োজন করা হবে না। মাকে নামমাত্র গয়নাতে সাজানো হবে।”
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের নীচুপট্টির বাড়ির অদূরে আরও একটি কালীপুজো হয়। সেই পুজোও ‘কেষ্ট কালী’ হিসেবেই পরিচিত। এই বছর সেই সেই পুজোর তদারকি করছেন কাজল শেখ। তিনি জানিয়েছিলেন, দাদার পুজোয় ভাই দেখভাল করছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।