তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে ধর্মঘটের ডাক বিজেপির। বুধবার ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক গেরুয়া শিবিরের। এদিকে, আগামিকাল বাংলাকে সচল রাখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। তৃণমূলেরও হুঁশিয়ারি, “কাল কোনও ধর্মঘট হবে না।”
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের পরেই বিজেপির তরফে বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানে পুলিশের অত্যাচারের প্রতিবাদেই ওই বন্ধ পালন করা হবে। সেই ঘোষণার আধ ঘণ্টার মধ্যেই নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরজি করের ঘটনা এবং তৎপরবর্তী আন্দোলনের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘‘তদন্ত চাওয়ার এবং সুবিচার চাওয়ার দায়িত্ব ও অধিকার আমাদের সকলেরই আছে। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) মহানগরকে এবং তার পর কাল (বুধবার ) বাংলাকে স্তব্ধ করার যে প্রয়াস হল এবং হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অসমর্থনীয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা, পরীক্ষা আছে এবং চলছে। শারদোৎসবের বেচাকেনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ী, কর্মজীবী, পেশাজীবী, বৃত্তিজীবী বৃহৎ সংখ্যক মানুষের ভবিষ্যৎ এতে বিপন্ন হচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-সহ সমস্ত আপৎকালীন পরিষেবা বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানাচ্ছে আগামী কালের প্রস্তাবিত বন্ধকে মেনে নেওয়া হবে না। সকলের কাছে অনুরোধ এই বন্ধে অংশ নেবেন না।’’ এ ব্যাপারে সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সরকারের বিশেষ নির্দেশও ঘোষণা করে আলাপন বলেন, ‘‘অফিস-কাছারিতে অবশ্যই স্বাভাবিক ভাবে আসবেন।’’
বিজেপির ডাকা বন্ধকে ‘চাপিয়ে দেওয়া বন্ধ’ বলে মন্তব্য করে আলাপন বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের কথা অনেকেই জানেন। সাধারণ ভাবে, এই ধরনের অচলাবস্থা জোর করে সৃষ্টির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের নানা নির্দেশ আছে। বন্ধ তথা আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রাকে সহসা জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে বিচার বিভাগের নির্দেশ মান্য। তাই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত বুধবার স্বাভাবিক জনজীবন চালু রাখা হবে।’’এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন পরিবহণ মাধ্যমের সরকারি এবং বেসরকারি সংগঠনগুলিকেও বুধবার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বলা হয়েছে নবান্নের তরফে। আলাপন জানিয়েছেন, বুধবার সর্ব ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে বাংলাকে সচল রাখাই হবে সরকারের লক্ষ্য।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, “আগামিকাল কোনও বন্ধ হবে না। মানুষ বাংলা বন্ধের ডাক ব্যর্থ করুন। চক্রান্ত ভেস্তে গিয়েছে বলে ধর্মঘটের ডাক। জনজীবন স্বাভাবিক রাখুন। এটা বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত।” নবান্ন অভিযানের চূড়ান্ত সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “নবান্ন অভিযান নয়, সমাজবিরোধীদের অভিযান। এখন জাস্টিস নয়, চেয়ার চাই। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। বিজেপির কিছু গুন্ডা অরাজকতা করেছে। এর মধ্যে অনেক বাংলা বিরোধী অপশক্তি আছে। একটা বড় প্লট। পুলিশ সমস্ত আক্রমণের মুখে পড়ে, রক্তাক্ত হয়েও গোটা পুলিশবাহিনী সংযমের পরিচয় দিয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে হঠাতে যা করার তাই করেছে।”