Bardhaman-Durgapur: BJP’s Dilip Ghosh looks to lose to Kirti Azad; TMC candidate gets over 7 lakh votes in Bardhaman–Durgapur

Bardhaman-Durgapur: বিশাল ব্যবধানে হার দিলীপ ঘোষের, সব পদ হারানোর পরে গেল ‘সাংসদ’ তকমাও

পরাজিত দিলীপ ঘোষ।। ‘আদি’ বিজেপি শিবিরে সবচেয়ে শোকের খবর এটাই। আসন বদলের পরে প্রথম দিকে মনমরা থাকলেও দিলীপ নিজে এবং তাঁর অনুগামীরা আশা করেছিলেন সহজ জয় হবে। কিন্তু শেষমেষ ১,৩৭,৫৬৪ ভোটে হারলেন দিলীপ। আজাদ পেয়েছেন ৭ লক্ষের বেশি ভোট। অন্যদিকে, দিলীপ পেয়েছেন প্রায় ৫.৬ লক্ষ ভোট।

এবার দিলীপ ঘোষের কেন্দ্র নিয়ে গোড়া থেকেই ছিল খানিক ওলটপালট হাওয়া। মেদিনীপুর থেকে বর্ধমান-দুর্গাপুর। ভোট ঘোষণার বহু পরেও বিজেপি প্রার্থী তালিকা নিয়ে চূড়ান্ত জটিলতা ছিল। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ফের টিকিট পাবেন কিনা, তা নিয়ে নানা জল্পনা মাথাচাড়া দেয়। শোনা যায়, মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী হিসাবে ভেবেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে তা নিয়ে নাকি চূড়ান্ত মতবিরোধ ছিল। বারবার দিল্লির শাহী দরবারে তা নিয়ে নাকি তদ্বিরও করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদাররা। যদিও সে গুঞ্জনকে মিথ্যা বলেই দাবি করে গেরুয়া শিবির। এর পর আর মেদিনীপুরে টিকিট পাননি দিলীপ। পরিবর্তে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট দেওয়া হয় তাঁকে।

তখন দিলীপ ব্যবধান নিয়ে কিছু না বললেও চিন্তায় ছিলেন না জয় নিয়ে। প্রথম দিন বর্ধমান-দুর্গাপুরে পা রেখেই বলেছিলেন, ‘‘আমি জেতার জন্যই এসেছি।’’ জয় নিয়ে নিশ্চিতও ছিলেন। মেদিনীপুর নিয়ে আক্ষেপের বদলে এমনও বলেছিলেন যে, ‘‘ওই আসনটা কি আমার পৈতৃক সম্পত্তি নাকি? সব আসনই বিজেপির।’’ ২০১৯ সালে ওই আসনে একেবারে শেষ বেলায় প্রার্থী করা হয়েছিল এসএস অহলুওয়ালিয়াকে। অনেকটা সময় পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত জিতেছিলেন আড়াই হাজারের কম ভোটে।

তবে এ বার দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে প্রথম থেকেই চাপে ছিল বিজেপি। একটু একটু করে ব্যবধান বাড়ছিল তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের। মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদও দিলীপ বলেন, ‘‘পিছিয়ে থাকলেও আমার জয় নিশ্চিত।’’ কিন্তু দুপুর গড়াতেই দিলীপের পিছিয়ে থাকার ব্যবধান লাখ ছাপিয়ে যায়। বিকেল হতেই তা পৌঁছে যায় সওয়া লাখের উপরে। প্রথম থেকে প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তিকে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ শানিয়েছেন দিলীপ। অতীতে বিজেপির টিকিটে জেতা কীর্তিকে আরও অনেক কিছু নিয়েই তোপ দেগেছেন। কিন্তু বাংলার ‘ভূমিপুত্র’ দিলীপকে হারিয়ে কীর্তি স্থাপন করলেন কীর্তিই। ২০১৪ সালে যে ব্যবধান জিতেছিলেন তৃণমূলের সঙ্ঘমিত্রা মমতাজ, তার চেয়েও বেশি ব্যবধান এনে দিলেন কীর্তি।

অন্যদিকে, প্রাক্তন আরএসএস প্রচারক থেকে রাজনীতিতে এসেই রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন দিলীপ। পর পর দুই দফায় রাজ্য সভাপতি থেকেছেন। প্রথমে খড়্গপুর সদরের বিধায়ক এবং পরে মেদিনীপুরের সাংসদ হয়েছেন। রাজ্য সভাপতি পদে সুকান্ত মজুমদার আসার পরে তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিও হয়েছিলেন। কিন্তু মাঝে বারংবার নেতৃত্বের বিরোধিতা করার খেসারত দিতে হয়েছে তাঁকে। চলে যায় সর্বভারতীয় পদও। এর পরে রাজ্য বিজেপির ‘সফলতম’ রাজ্য সম্পাদকের ‘সাংসদ’ পরিচয়টুকুই ছিল। এ বার আর সেটাও রইল না।