সমকামী সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি না হওয়ায় যুবককে খুনের অভিযোগ উঠল এক তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে ঘটনাটি ঘটেছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি মৃত যুবকের নাম জিৎ দানা (১৯)। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গলসির খেতুড়া গ্রামে। অভিযুক্ত তান্ত্রিকের নাম মিলন নাইয়া। বাড়ি গলসি বাজারের ল্যাওলাপুল এলাকায়। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে গলসি থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের বাবা সমীর দানা পুরুলিয়া একটি চালকল কাজ করেন। জিত রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই জিতের মা মিতা দানা অসুস্থ। চিকিৎসা করিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই স্ত্রীকে সুস্থ করে তুলতেই সমীরবাবু তান্ত্রিক মিলন নাইয়ার কাছে গেছিলেন। এই সুবাদেই মিলন তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত। জিতের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল।
মৃতের মা মিতাদেবী বলেন, “ওই তান্ত্রিকের চালচলন আমার ঠিক মনে হয়নি। বাড়িতে আসাতে নিষেধ করেছিলাম। ছেলেকেও মেলামেশা করতে মানা করা হয়েছিল। এর জন্য ছেলেকে ওই তান্ত্রিক খুন করে দিতে পারে স্বপ্নেও ভাবিনি।” পুলিশ জানিয়েছেন, গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ১৯ বছরের ওই তরুণকে। গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খুনের পরে দেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দেহে আঘাত লেগেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জিতের দেহ যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে, তার পাশেই একটি কালীমন্দির রয়েছে। বছরে এক বার সেখানে পুজো হয়।
পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, ধৃত তান্ত্রিকের সঙ্গে সমকামী সম্পর্ক ছিল নিহত যুবক জিতের। শনিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন জিৎ। রবিবার সকালে জিতের বাড়ির লোকজন অভিযুক্তকে জেরা করে জানতে পারেন, তাঁর দেহ সামনের একটি জমিতে পড়ে রয়েছে। জিতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। জিতের কপালে, বুকে এবং পেটে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। গলায় ফাঁসের চিহ্নও ছিল। এর পরেই অভিযুক্ত তান্ত্রিক মিলনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, শনিবার রাতে দু’জনের মধ্যে অশান্তির জেরেই জিৎকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন মিলন। পুলিশ ইতিমধ্যেই জিতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।