তৃণমূলে যোগ দিলেন অর্জুন সিংহ (Arjun Singh)। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ঘাসফুলের উত্তরীয় পরে নিলেন তিনি। ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী প্রমুখ।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক সাড়ে ৪টে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে পৌঁছে গেলেন অর্জুন সিং। তারপর চলল দীর্ঘ বৈঠক। তার আগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, রাজ চক্রবর্তীদের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক হয় অর্জুন সিংয়ের সঙ্গেও। সেখানে একটু বাকবিতণ্ডা হলেও তা অভিষেকের নেতৃত্বে থেমেও যায়। মতভেদ দেখা দিয়েছিল তাঁকে দলে ফেরানো নিয়ে বলে সূত্রের খবর। তারপর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই ফেসবুকে ছবি বদল হয়ে যায়।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election 2019) আগে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্মবনে পা রেখেছিলেন ভাটপাড়ার তিনবারের বিধায়ক অর্জুন সিং। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, অর্জুন আশা করেছিলেন, তাঁকে বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল (TMC)প্রার্থী হিসেবে টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু আশাহত হন। আর সেই কারণেই সম্ভবত অসন্তুষ্ট হয়ে জোড়া ফুল শিবির ত্যাগ করে গেরুয়া বনে প্রবেশ করেছিলেন। তার ‘পুরস্কার’ হিসেবে ২০১৯ এ বিজেপি অর্জুন সিংকে বারাকপুরের প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের সুযোগ দেন। বারাকপুরের ২ বারের তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে অনায়াসে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন ভাটপাড়ার দাপুটে নেতা অর্জুন সিং। তারপর অবশ্য পদ্মবনে অর্জুনের কাজকর্মের রাস্তা ততটা মসৃণ হয়নি। সম্প্রতি পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বিজেপি সাংসদ। পাট শ্রমিকদের স্বার্থে প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একমঞ্চে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: SSC মামলা : মেয়ে–সহ নিখোঁজ পরেশ অধিকারী! নামলেন না শিয়ালদহে
বিজেপি বড় ধাক্কা খেল অর্জুন সিংয়ের এই দলবদলে। কারণ বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখানে উত্তর ২৪ পরগণার বিজেপি সংগঠন কার্যত শেষ হয়ে গেল। আবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অর্জুন সিং বড় ভূমিকা নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘ এক ঘন্টার বৈঠকের পর নিজেদের মধ্যে বিবাদ কাটিয়ে ফিরে এলেন অর্জুন সিং।
দলে ফিরে অর্জুন সিং সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য বিজেপিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাকে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চিত করছে দেখে ফিরে এলাম। বাংলায় ফেসবুকের রাজনীতি করে কোনও লাভ নেই। আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম বোঝাতে পাটশিল্পের অগ্রগতি করতে। কিন্তু তার মাত্র ২৫ শতাংশ হয়েছে। আরও কাজ করতে হবে। আমি দিল্লিতে গিয়ে সাংসদ পদ ত্যাগ করব। এখনও যাঁরা তৃণমূলের সাংসদ হয়েও বিজেপিতে আছেন তাঁদের উচিত ছেড়ে দেওয়া। আমিও তখন ছেড়ে দেব।’
আরও পড়ুন: ইতিহাসে প্ৰথম বাঙালি কন্যা পিয়ালী! অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট চূড়ায় পা পড়ল চন্দননগরের মেয়ের