ফের বঞ্চিত বাংলা। সাধারণতন্ত্র দিবসে (Republic Day) রাজধানী দিল্লির রাজপথে দেখা যাবে না বাংলার ট্যাবলো। কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র তা এখনও স্পষ্ট নয়। এবিষয়ে এখনও কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি। কিন্তু এ সংক্রান্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সাম্প্রতিক বৈঠকে ডাক পাননি বাংলার প্রতিনিধিরা। যা থেকে কার্যত স্পষ্ট সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজধানীর রাজপথে দেখা মিলবে না বাংলার ট্যাবলোর। কেন্দ্রের এই আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া মিলেছে সমস্ত মহল থেকেই। বসু পরিবার থেকে রাজ্যের শাসকদল, সকলেই নিন্দা করেছেন এই সিদ্ধান্তের।
আগামী ২৬ জানুয়ারিতে এবারে থিম ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই থিম বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তীর উপলক্ষে এবার নেতাজিকে সামনে রেখেই ট্যাবলো পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌখিকভাবে রাজ্যের প্রস্তাব খারিজের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে লিখিত ভাবে এখনও রাজ্য সরকারকে কিছু জানানো হয়নি।
ট্যাবলো বাতিল হওয়ার পর টুইটারে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় লেখেন, ‘প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজির ট্যাবলো বাদ দিয়ে নেতাজির নেতৃত্বে আইএনএ-এর লড়াইকে খাটো করল কেন্দ্রীয় সরকার। নেতাজির জন্মদিবসকে এখন থেকে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পণ্ডিতরা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের পুনর্লিখন করলেন। লজ্জা!’
আরও পড়ুন: Hooghly: বর পালাল জানালা দিয়ে! প্রেমিকা সহ খুঁজে দিতে পুলিশের দ্বারস্থ বউ
মজার বিষয় হল, কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের ট্যাবলোকে ছাড় দিয়েছে। অথচ উত্তরপ্রদেশের ট্যাবলোর থিম কাশী বিশ্বনাথ মন্দির তো উত্তরাখণ্ডের থিম কেদারনাথ। দু’টি থিমই ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক-বাহক হলেও স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে কার্যত কোনও সম্পর্ক নেই তাদের। স্বাভাবিকভাবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ নিয়ে বরাবরই উৎসাহ দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক বার বাছাই কমিটিকে রবীন্দ্রনাথের ট্যাবলোর সঙ্গে ‘নীল দিগন্তে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর বাজানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে মমতার প্রস্তাবে আপত্তি তোলা হলেও পরে তা মেনে নিয়েছিল বাছাই কমিটি। মমতা-আমলেই বাংলার ছৌ নাচ প্রথম ট্যাবলো পুরস্কারও পায়।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘গত বার যখন বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া হয়েছিল, তখনও কোনও কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। এ বারও তাই হল। কেন বাংলাকে বার বার বঞ্চিত করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে আমরা সংসদেও সোচ্চার হয়েছিলাম। আবারও প্রতিবাদ জানাব। এ ছাড়াও দলীয় স্তরে প্রতিবাদ তো চলবেই।’’
আরও পড়ুন: ‘সেক্স টয়’ কিনতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে, ৩৭ লক্ষ খোয়া গেল অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের