ঐতিহ্যবাহী উপাসনাগৃহে বসে সম্প্রতি দুর্গাপুজো-সহ বেশ কিছু বিষয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সূত্রের খবর, তাঁর ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ বার বিশ্বভারতীর কাছে রিপোর্ট চাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)। ওই সূত্রেই আরও খবর, উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ করেছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি।
ঘটনার সূত্রপাত ২২ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহে বসন্তউৎসব নিয়ে কথা বলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেখানেই ওঠে দুর্গাপুজো প্রসঙ্গ। বলেন, “আপনারা জানেন আজ দুর্গাপুজো বিশ্বের অন্যতম পুজো হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়, দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল ব্রিটিশদের পদলেহন করতে। তৎকালীন রাজাদের মধ্যে প্রতিযোগীতা হত, কে ইংরেজদের দুর্গাপুজোর মঞ্চে আনতে পারবে। অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত। অনেক পানীয়ের ব্যবস্থাও থাকত। পরবর্তীতে দুর্গাপুজো একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মার্চ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রীকে। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতোকে রিপোর্ট তলব করল পিএমও।
আরও পড়ুন: Ramnabami: রামনবমীর মিছিলে বন্দুক, মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার সুমিত সাউ
সম্প্রতি বেশ কয়েক বার উপাসনা থেকে তাঁর সমালোচকদের একের পর এক জবাব দিয়ে যাচ্ছিলেন উপাচার্য। মার্চের সাপ্তাহিক উপাসনা থেকে বসন্ত উৎসব প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা প্রথার কথা বলেন, তাঁরা বসন্ত উৎসবের নামে বসন্ত-তাণ্ডব চান। আমরা সেই বসন্ত-তাণ্ডবের পক্ষপাতী নই।’’ ওই বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশকেও নিশানা করে তাঁদের ‘অশিক্ষিত’ এবং ‘অল্পশিক্ষিত’ বলে তোপ দাগেন বিদ্যুৎ।
প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতীর উপাচার্য একাধিকবার নানারকম মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন পড়ুয়া, আবাসিকরাও। একাধিক ঘটনায় রং লেগেছে রাজনীতির। এবার দুর্গাপুজো নিয়ে উপাচার্যের মন্তব্যে বিতর্ক। প্রসঙ্গত, নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা হয়। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনের এই উপাসনা গৃহের প্রতিষ্ঠাতা।
আরও পড়ুন: Murder Case: এনজেপি স্টেশনে ঢোকার মুখে কামাখ্যা এক্সপ্রেসে চলল গুলি! মৃত এক