মাঝ আকাশে হঠাৎ দুর্বিপাকে পড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান। শুক্রবার বারাণসী থেকে ফেরার সময় কলকাতায় নামার অল্প আগে এই ঘটনা। আকস্মিক এই দুর্যোগে এক লহমায় মুখ্যমন্ত্রীর ছোট বেসরকারি ভাড়া নেওয়া বিমানটি সাত হাজার ফুট থেকে দু’হাজার ফুটে নেমে আসে। সেই সঙ্গে টালমাটালও করতে থাকে। ঘটনায় মমতার কোমরে জোর ব্যথা লাগে। আগে থেকেই তাঁর কোমরে ব্যথা ছিল। ফলে কষ্ট বাড়ে।
রাজ্য সরকারের ভাড়া করা ফ্যালকন বিমানে ইদানীং প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী যাতায়াত করেন। তবে এ দিন যে বিমানটিতে তিনি চড়েছিলেন, নির্দিষ্ট ভাবে সেই বিমানটিতে তিনি এর আগে সফর করেননি। ঘটনাচক্রে বিমানের দুই পাইলট ছিলেন বাবা ও মেয়ে। দুর্যোগ কাটার মিনিট চারেক পরে মুখ্যমন্ত্রীর বিমানটি কলকাতার মাটি ছোঁয়।
এ দিন আকাশ ছিল যথেষ্ট পরিষ্কার। মেঘ, বৃষ্টি, ঝড় ছিল না। তবে বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিমানটি আচমকা একটি ঝঞ্ঝার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দেখে পাইলট অত্যন্ত দ্রুততায় উচ্চতা প্রায় পাঁচ হাজার ফুট নামিয়ে দেন। তাতেই প্রবল ঝাঁকুনি ও উথালপাথাল।
আরও পড়ুন: পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিমতলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন সাধন পাণ্ডের
এই বিষয়ে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। একইসঙ্গে ডিজিসিএ’র কাছে রিপোর্ট তলব করল রাজ্য সরকার। এমনকী যে এয়ার রুটে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান ফিরেছে সেটার অনুমতি আগে থেকে নেওয়া হয়েছিল কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিমান বিভ্রাটের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় গোটা দেশে। মুখ্যমন্ত্রী জেড প্লাস নিরাপত্তা পান বলেই তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনায় ডিজিসিএ’র কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ডিজিসিএ পৃথকভাবে তদন্ত করছে। হঠাৎ কেন এই ঘটনা ঘটেছে? জানতে চাওয়া হয়েছে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কাছে। আর বলা হয়েছে ডিজিসিএ’র কাছ থেকে জেনে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিনও পাইলট রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম আকাশে যখন সাত হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ছ’হাজার ফুটে নামছিলেন, আচমকাই সামনে ঝঞ্ঝাপূর্ণ মেঘ দেখতে পান। সে কথা তিনি কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে জানান। এটিসি তাঁকে দু’হাজার ফুট উচ্চতায় নেমে আসতে বলে। তিনি সেই মতো নেমে আসেন। বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, পাইলটের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তে নামবে ডিজিসিএ। তবে পাইলটের রিপোর্টে দ্বিতীয় কোনও বিমানের অস্তিত্ব ছিল কি না, তা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: ‘আমরা যেন দায়িত্ব, নম্রতা, আনুগত্য ভুলে না যাই’, বিপুল জয়ের পর টুইট করলেন মমতা