ভর সন্ধ্যায় প্রকাশ্য রাস্তায় যুবতীকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বহরমপুরে। সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুর শহরের সূর্য সেন রোডে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার ৩ ঘণ্টার মধ্যেই মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় সে জানিয়েছে, সুতপা চৌধুরী নামে ওই তরুণী একাধিক যুবকের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়ানোয় তাকে খুন করেছে সে।
খুনের যে ভিডিয়ো ছড়িয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে যে রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন সুতপা। তাঁকে একের পর এক কোপ মারছেন সুশান্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা কথা বলার চেষ্টা করলেও সুতপা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকে সুশান্ত। পরে রাত ১০ টা নাগাদ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, সুশান্তের ফোন থেকে খুনের একাধিক ভিডিয়ো মিলেছে। জেরায় ধৃত জানিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সুতপার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছিল সুতপাকে। কিন্তু অপর একজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়ায় সম্প্রতি সম্পর্ক ভেঙে দিতে চাইছিলেন। তাই ‘প্রতিশোধ’ নিতেই সুতপাকে খুন করে বলে জেরায় স্বীকার করেছে সুশান্ত। কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র সুশান্তের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ছত্রে ছত্রে আছে প্রতিহিংসা, ক্ষোভ। ফেসবুকের বায়োতে লেখা আছে, ‘আই অ্যাম আ ইন্ডিয়ান (আমি একজন ভারতীয়)। এই Bewafa তোর উপর একদিন অনেক ভারী পড়বে। এমনকী তোর জান পর্যন্ত যেতে পারে madam ji।’
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সুশান্ত দাবি করেছে যে খুনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল। গোরাবাজারের যেখানে সুতপাকে খুন করা হয়, সেখানে মাসখানেক আগে থেকে ‘রেইকি’ চালাচ্ছিল। খুনের পর পালানোর জন্য ব্যাগে জামাও রেখেছিল। সঙ্গে ছিল নকল বন্দুক এবং ছুরি। যে ছুরি বারবার কুপিয়ে খুন করেছে সুতপাকে। তারপর লাক্সারি ট্য়াক্সিতে উঠে রক্তভেজা জামা পালটে নিয়েছিল। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে তিনবার গাড়িও পালটেছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি। সামশেরগঞ্জ থেকে মালদহগামী একটি বাস থেকে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একাধিক ধারায় রুজু করা হয়েছে মামলা।
সুতপার বাবা জানিয়েছেন, মেয়েকে ব্লাকমেল করত ছেলেটি। ফোনে ভয় দেখাত। এই নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে আলোচনা হয়। দুজনকেই পড়াশুনোয় মন দিতে বলি। কিন্তু ও যে মেয়েকে মেরে ফেলতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি।