সাম্প্রতিক অতীতে বারেবারে সংঘাতের আবহ দেখা গিয়েছে নবান্ন বনাম রাজভবনের। এমন আবহে বৃহস্পতিবার একেবারে অন্যরকম প্রেক্ষাপট দেখা গেল।
বিজয়ার পর শুভেচ্ছা জানাতে রাজভবনে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধে ৬টা নাগাদ রাজভবনে পৌঁছন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগমন ঘিরে আগে থেকেই তৈরি ছিল রাজভবন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য চা-মিষ্টিমুখের আয়োজন করেছিলেন বোস। রাজ্যপাল সিভি বোসকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর হাতে ফুলের স্তবক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালও তাঁকে শাল পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান। সাকুল্যে ৪৫ মিনিট রাজভবনে ছিলেন তিনি। পরে বাইরে এসে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানান, “বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। বিজয়ার পর এটা আমাদের সৌজন্য।”
পায়ের চোটের সমস্যায় প্রায় মাস দেড়েক বাড়িতেই বিশ্রামে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুজোতেও দেখা যায়নি তাঁকে। ভারচুয়ালি সমস্ত পুজোর উদ্বোধন সেরেছেন। তবে গত ২৭ অক্টোবর রেড রোডে দুর্গাপুজো কার্নিভ্যালে (Puja Carnival) যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর মঙ্গলবার থেকে নবান্নে যাতায়াত শুরু করেছেন। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি গেলেন রাজভবনে (Rajbhaban), রাজ্যপালের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। তার আগে এদিন মুখ্যমন্ত্রী যান বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে, নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাকে দেখতে।
রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে প্রায়ই নবান্নের সংঘাত লেগে থাকে। পুজোর আগে ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের বকেয়া টাকা নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল এ বিষয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের আশ্বাসও দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সেই ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে পোস্ট করেছেন মমতা। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের পাওনা অর্থ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালানোর অভিযোগ এনেছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আমি লক্ষ করছি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এমএনআরইজিএ তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে যে প্রচার করা হয়েছে, তার মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে বেশ কিছু ভুল তথ্য দেখানো হয়েছে। আমাদের প্রবল আন্দোলন, এমনকি বিস্তারিত তথ্য এবং হিসাব জমা দেওয়ার পরেও কেন্দ্র কোনও বকেয়া অর্থ দেয়নি। উল্টে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর জন্য ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। রাজ্য সরকারকে অপদস্থ করতেই এই কাজ করা হয়েছে।’’ মমতার আরও সংযোজন, ‘‘আমরা আমাদের প্রাপ্য অংশ পেতে চাই। এ ভাবে ভুল তথ্য ছড়ানোর পরেও আমরা বঞ্চিত মানুষের পাশেই থাকতে চাই।’’