তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রেশন দুর্নীতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ মন্ত্রীর সল্টলেকের জোড়া বাড়িতে পৌঁছেছিলেন তদন্তকারীরা। দীর্ঘ জেরার শেষে মধ্যরাতে মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে ইডি।
ইডি সূত্রের দাবি, জেরায় কোনও ধরনের সহযোগিতা করেননি মন্ত্রী বা তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী। এদিকে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন প্রচুর অর্থের খোঁজ মিলেছে মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী, কন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেকারণেই তাঁদের সকলেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro: কোন স্টেশনের কাছে কোন পুজো মণ্ডপ, উত্তর থেকে দক্ষিণ – রইল তালিকা
বৃহস্পতিবার সকালে জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের দু’টি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে ইডি। নাগেরবাজারে তাঁর পৈতৃক ভিটে এবং আপ্তসহায়ক অমিত দের দু’টি ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চলে। অভিযোগ, বিভিন্ন রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে সিন্ডিকেট তৈরি করে কেন্দ্রের পাঠানো ন্যায্যমূল্যের রেশন সামগ্রী বেআইনি ভাবে খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ইডির দাবি, জ্যোতিপ্রিয় যখন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী, তখন এই ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। ব্যাবসায়ী বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
তাঁর ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। এদিকে, ইডির দাবি রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েও যুক্ত। ইডির দাবি, নোটবন্দির সময়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু মল্লিকের স্ত্রী মনিদীপা ও তাঁর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেল আদালতে পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দুটি অ্যাকাউন্টই রয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্কে। একটি অ্যাকাউন্ট মনিদীপা মল্লিকের নামে। অন্য অ্যাকাউন্টটি প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের নামে। নোটবন্দি হয়েছিল ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর। ইডি জানিয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রীর আইডিবিআই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্যাশ তথা নগদ জমা হয়েছে ৬ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে জ্যোতিপ্রিয়র মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক মাসেই জমা পড়েছে নগদ ৩ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা।
তদন্তকারীদের দাবি, বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতে মেয়ে ও স্ত্রীর নামে ভুয়ো সংস্থা খুলে তাঁদের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছিল ওই টাকা।
আরও পড়ুন: Durga Puja Carnival: দুর্গাপুজোর কার্নিভালকে ঘিরে বন্ধ শহরের একাধিক রাস্তা