মোদির বঙ্গ সফরের দিনই বিজেপিতে ভাঙন। তৃণমূলে যোগ দিলেন ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদ কুনার হেমব্রম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। ফুলবদল করেই কেন্দ্রের তুলোধোনা করেন তিনি। বলে রাখা ভালো, গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে ভালো ফল করে বিজেপি। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্র জঙ্গলমহলেরই অন্তর্গত। এবারও সেখানে ভালো ফলেরই আশা বিজেপির। তারই মাঝে বিদায়ী সাংসদের দলবদলে গেরুয়া শিবির যথেষ্ট অস্বস্তিতে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এ বার কুনারকে লোকসভায় টিকিট দেয়নি বিজেপি। চিকিৎসক প্রণত টুডুকে প্রার্থী করেছে তারা। টিকিট না পেয়ে আগেই বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন কুনার। ঝাড়গ্রামে তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সোরেনের হয়ে প্রচার করবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তবে জানিয়েছিলেন, অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন না। এ বার সেই কুনারই যোগ দিলেন তৃণমূলে। গত ৮ মার্চ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন কুনার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিঠিও দেন তিনি। জানান, ব্যক্তিগত কারণে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান।
বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছিল, দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগছেন কুনার। হাঁটাচলাতেও সমস্যা রয়েছে। সে কারণেই ছাড়তে চান রাজনীতি। তবে দলের অন্দরে গুঞ্জন ছিল, ঝাড়গ্রামে টিকিট পাবেন না বুঝেই ওই পদক্ষেপ করেন কুনার।যদিও সাংসদ পদ থেকে কুনার ইস্তফা দেননি। দলত্যাগের পরেও ঝাড়গ্রাম স্টেশনে রেলের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে কাকে প্রার্থী করা হবে, সেই নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা। পেশায় চিকিৎসক প্রণত টুডুর নাম উঠে আসে। এই প্রসঙ্গে কুনার বলেছিলেন, ‘‘কে প্রার্থী হবেন আমি বলতে পারব না। অনেকেই লড়াইয়ে রয়েছেন।’’
কুনারের দলত্যাগ প্রসঙ্গে সুকান্ত জানিয়েছিলেন, বিদায়ী সাংসদের সঙ্গে দলের কোনও রাগারাগি নেই। তার পরেও কুনার জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূলের প্রার্থী কালীপদের হয়ে প্রচার করবেন। কালীপদ সম্পর্কে তাঁর শ্যালক। কুনারের স্ত্রীর পিসতুতো দাদা তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ। এই প্রসঙ্গে কুনার জানিয়েছিলেন, শ্যালক বাড়িতে এসে সহযোগিতা চেয়েছেন। দু’-চার দিন প্রচারে যাবেন। তবে তিনি তৃণমূলের ঝান্ডা ধরবেন না। সে সময় তিনি বলেন, ‘‘নিজের দল ছেড়েছি। অন্য দলে যাব না।’’ রবিবার ঝাড়গ্রামে অভিষেকের সভায় তৃণমূলের ঝান্ডাই হাতে তুলে নিলেন কুনার। যোগ দিলেন তৃণমূলে।