বেঙ্গল সাফারি পার্কের সিংহীর নাম ‘সীতা’ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট পর্যন্তও। রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নামবদলের জন্য। নির্দেশ মেনে নাম পরিবর্তনে রাজি রাজ্য সরকারও। এবার নাকি সিংহী ‘সীতা’র নামকরণ নিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে ত্রিপুরার বনকর্তাকে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গল সাফারি পার্কে (Bengal Safari Park) ত্রিপুরা থেকে আসা সিংহী ‘সীতা’র নামকরণে আপত্তি তুলে কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। গত বুধবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্টেট জু অথরিটির কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গল বেঞ্চে পুনরায় মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘কারা এই নাম রেখেছেন? এত বিতর্ক কারা তৈরি করছেন? কোনও পশুর নাম কি কোনও দেবতা, পৌরাণিক নায়ক, স্বাধীনতা সংগ্রামী অথবা নোবেলজয়ী ব্যক্তির নামে রাখা যায়? সিংহ-সিংহীর নাম ‘আকবর’ আর ‘সীতা’র নামে রেখে শুধু শুধু বিতর্ক ডেকে আনা হয়েছে। এই বিতর্ক এড়ানো যেত। শুধু ‘সীতা’ নয়, ‘আকবর’ নামটিও রাখা উচিত নয়। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের মহৎ সম্রাট ছিলেন। অত্যন্ত দক্ষ এবং ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। রাজ্যের উচিত ছিল এই ধরনের নামের বিরোধিতা করা।’’ আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ত্রিপুরাতেই ওই সিংহ এবং সিংহীর নামকরণ করা হয়েছিল। রাজ্য নাম পরিবর্তন করার কথা বিবেচনা করছে।
মৌখিক ভাবে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার রাজ্যের উদ্দেশে ওই দুই পশুর নাম পরিবর্তন করে নিতে বলেন। সেই সঙ্গে মামলাকারীকে এই মামলাটি জনস্বার্থ মামলা হিসাবে দায়ের করার নির্দেশ দেন তিনি।
তারপেরই সাসপেন্ড করা হল ত্রিপুরার প্রিন্সিপাল চিফ কনজারভেটর অব ফরেস্টস (ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজ়ম) প্রবীণলাল আগরওয়ালকে। সিংহীর নাম বিতর্কের জেরে শনিবারই বন বিভাগের ওই কর্তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে ত্রিপুরা সরকার। সূত্রের খবর, ওই সিংহ দম্পতিকে যখন ত্রিপুরার বাইরে পাঠানো হচ্ছিল, তখন ডিসপ্যাচ রেজিস্টারে সিংহের নাম ছিল ‘আকবর’ ও সিংহীর নাম ছিল ‘সীতা’। জানা যাচ্ছে, যে সময়ে এটি ঘটেছিল, তখন ত্রিপুরার চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন প্রবীণলাল আগরওয়াল।