কলকাতায় নরেন্দ্র মোদীর রোড-শোর দিন তাঁকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভার বিষ্ণুপুরে প্রচারসভা ছিল অভিষেকের। সেই সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ শানান অভিষেক।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছিল রাজ্য বিজেপি। তৃণমূলের দাবি, সেই ব্যঙ্গচিত্রে সারদা দেবীকে অপমান করা হয়েছে। শালীনতা লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। চাপের মুখে সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। সরিয়েও নেওয়া হয়েছিল সেই বিজ্ঞাপন। আর সেই প্রসঙ্গ টেনেই মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন অভিষেক। গলায় বিস্ময় ঢেলে তিনি বলেন, ‘‘আজ (মঙ্গলবার) সারদা মায়েরও বাড়িতে যাবেন মোদী। যে বিজেপির লোকেরা সারদা মাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে, ভোটের সময় সেই সারদা মায়েরই শরণাপন্ন হতে হচ্ছে!’’ প্রসঙ্গত, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারেও নেমে পড়েছে তৃণমূলের আইটি সেল। এই আবহে আবার নতুন করে ভাইরাল হচ্ছে বিজেপির সেই বিতর্কিত বিজ্ঞাপন।
মঙ্গলবার মোদীর রোড-শো কলকাতা উত্তরে। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে রোড-শো করে তাঁর যাওয়ার কথা সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত। বাগবাজারে সারদাদেবীর মূর্তিতেও প্রণাম করার কথা আছে মোদীর। বিষ্ণুপুরের সভা থেকে অভিষেক তা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন বিজেপির দিকে। এই প্রসঙ্গে অভিষেক তুলে আনেন ২০১৯ সালের মে মাসে অমিত শাহের রোড-শো চলাকালীন বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ। তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, ‘‘মোদী আজ বিবেকানন্দের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মূর্তিতে প্রণাম করবেন। কলকাতাবাসীকে অনুরোধ করব, স্বামী বিবেকানন্দের বাসভবনে স্বামীজির মূর্তিকে বুক দিয়ে আগলে রাখবেন।’’
এখানেই শেষ নয়, অভিষেক আরও বলেন, “প্রচারে মোদী বাংলায় বার বার আসছেন। ভোট মিটলে আর তাঁর দেখা মিলবে না। মোদীর একটাও মন্ত্রী ডায়মন্ডহারবারে এই পাঁচ বছরে কখনও আসেননি। বিপদে-প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘরের ছেলেকেই পাশে পাবেন, বহিরাগতদের নয়। রেমালে এই জেলায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, কোনও বিজেপি নেতাকে দেখেছেন?” রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তিন মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে, বিজেপি নেত্রীর এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বারে বারে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেছে তৃণমূল। এদিন অভিষেকও ফের সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বিজেপি বলছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে। প্রধানমন্ত্রী চাইলেও বন্ধ করতে পারবে না।”
ডায়মন্ড হারবারে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকেও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘একটা প্রার্থী খুঁজতে এক মাস সময় লাগে! আমাকে সারা দিন গালিগালাজ করেন সিপিএম, বিজেপির নেতারা। আমি বুঝতে পারি না, এতই যদি রাগ তা হলে আমার বিরুদ্ধে কেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব দাঁড়ালেন না? আপনারা খবরের কাগজে যেমন বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, তেমন প্রার্থী চেয়েও বিজ্ঞাপন দিলে পারতেন। আমি নিশ্চিত, ভাল প্রার্থী পেতেন।’’