কৃষ্ণনগরের তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হলেন দলেরই ৬ বিধায়ক। অভিযোগকারী বিধায়করা হলেন নাকাশিপাড়ার কল্লোল খাঁ, কালিগঞ্জের নাসিরুদ্দিন আহমেদ, চাপড়ার রুকবানুর রহমান, করিমপুরের বিমলেন্দু সিংহ রায়, পলাশিপাড়ার মানিক ভট্টাচার্য এবং কৃষ্ণনগরের উজ্জ্বল বিশ্বাস।
মহুয়ার বিরুদ্ধে লেখা ওই চিঠিতে সই নেই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা এবং কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের। যিনি অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি। অর্থাৎ, মহুয়ার লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের পাঁচ জন বিধায়কই তাঁর বিরুদ্ধে দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের সঙ্গেই অভিযোগ করেছেন করিমপুরের বিধায়ক। যে বিধানসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগর লোকসভা নয়, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। যদিও এলাকাটি তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত।
সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ছয় বিধায়কের অভিযোগ, তিনি বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ তিন ব্লক সভাপতি-সহ ১১৬ জন বুথ সভাপতি এবং ১৬টি অঞ্চল সভাপতি বদল করেছেন। দ্বিতীয়ত, মহুয়া ওই বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ গিয়ে তাঁদের এলাকায় যাতায়াত করেন। বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীদের ‘হাওয়া’ দিয়ে নদিয়া জেলার রাজনীতিতে মহুয়া ‘অস্থিরতা’ তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই বিধায়কেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সংখ্যালঘু এলাকায় কুখ্যাত ‘তোলাবাজ ও সমাজবিরোধীদের’ নিয়ে চলাফেরা করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন তিনি। বর্তমান বিধায়কদের সরিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করবেন বলে একাধিক ব্লকের নেতাদের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জেলায় বিজেপির বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায় না। উল্টে দলেরই বিধায়কদের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের পদক্ষেপ করতে ‘সক্রিয় ইন্ধন’ জোগাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের আগে সংসদে টাকার বিনিময়ে আদানি বিরোধী প্রশ্ন তোলার অভিযোগে মহুয়ার সদস্যপদ খারিজ হয়। ভোটের কয়েকমাস আগে তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করে এথিক্স কমিটি। সাংসদ পদ হারানো মহুয়ার পাশে থেকে তাঁকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব তুলে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নদিয়া গিয়ে তাঁকে সামনে এনে এই ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মহুয়াকে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর থেকে প্রার্থী করা হয়। বিশাল ব্যবধানে মহুয়া সেখান থেকে জয়ী হওয়ার পরও জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব ছিল তাঁর হাতেই। আর সেই ক্ষমতাবলে মহুয়া নিজের মর্জিমতো সংগঠন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ জেলার বাকি বিধায়কদের।