ফার্মাসি পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু জঙ্গিপুরে। কলেজের হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। খুন নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। কলেজের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। তাঁদের দাবি, দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও কর্তৃপক্ষের হেলদোল ছিল না। শেষে হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
জাকির হোসেন ইনস্টিটিউট অফ মৃত ফার্মাসি কলেজের পড়ত মালদার ছেলে তৌহিদ করিম। চলতি মাসের ১৩ অগাস্ট রাতে কলেজের হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় তৌহিদের নিথর দেহ। পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে তাদের ছেলেকে। কারণ মৃত ছাত্রের চোখ দিয়ে রক্ত বের হওয়ার চিহ্নের পাশাপাশি দেহে একাধিক আঘাতের দাগও রয়েছে। ঘটনার পর মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করতে গেলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিস। বলা হয়, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই অভিযোগ পত্র নেওয়া হবে।
এখানেই শেষ নয় কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং থানা থেকে জানানো হয় সংবাদমাধ্যমে না জানানোর জন্য। মৃত ছাত্রের বাবা রেজাউল করিমের অভিযোগ, ‘১২ অগাস্ট রাতে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। ছেলে বাড়ি থেকে আমের আচার এবং ছাতু আনার কথা বলেছিল। কোনওরকম মানসিক অবসাদে ছিল না আমার ছেলে। যদি মানসিক অবসাদে থাকত তাহলে ১২ অগাস্ট রাতে ছেলের কথা বার্তায় আমরা বুঝতে পারতাম। আমি পেশায় লরি চালক। সেই সূত্রে ১৩ অগাস্ট আমি রঘুনাথগঞ্জে ছিলাম। সকাল থেকে আমার ছেলের ফোনে সুইচ অফ ছিল। রাত ৯ টা নাগাদ আমি হোস্টেলে যেতেই আমার ছেলের রুমমেট ফোন করে জানাই তোহিদ মারা গিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি হোস্টেলে গিয়ে দেখি আমার ছেলের নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। আমাদের খবর দেওয়া হয়নি। অথচ পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। আমি না গেলে হয়তো জানতেই পারতাম না আমার ছেলে মারা গিয়েছে। দেহ হয়তো লোপাট করা হত। পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে তাই বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলছি আমি। পুলিস বলেছিল, ময়নাতদন্ত আমাদের উপস্থিতিতে হবে। অথচ আমাদের জানানো হয়নি। এমনকি এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ নেয়নি পুলিস। পাল্টা আমাদের শাসানো হচ্ছে।’
মালদার ইংলিশ বাজার থানার যদুপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তোহিদ করিম। পাড়াতে খুব মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত ছিল সে। তাই তার মৃত্যু কোনওভাবেই আমরা মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। পুলিস প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নিলে আরজি করের ঘটনার মতো এলাকাবাসীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।