লোকসভা ভোটের আগেই দেশ জুড়ে চালু হয়ে যেতে পারে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। সোমবার সন্ধ্যায় এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই সম্ভাবনার মধ্যে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলায় কিছুতেই সিএএ চালু করতে দেবেন না। মোদী সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘সাহস থাকলে (সিএএ) আগে করতেন। লোকসভা ভোটের আগেই করতে হল কেন?’’
সোমবার বিকাল সাড়ে পাচঁটা নাগাদ, নবান্নে জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে সাংবাদিক বৈঠক করতে হচ্ছে। তার কারণ বিজেপির একটা কাজ হল ইলেকশন আসলেই সংবাদমাধ্যমকে একটা খবর খাইয়ে দেওয়া। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, মানুষ এখন যে সব সুবিধা পান, সিএএ চালু হলে সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে না তো? তাঁর আরও প্রশ্ন, যারা এতদিন ভোট দিয়েছেন, যাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, পঞ্চায়েত-পুরসভার কর্তা নির্বাচিত হয়েছেন, তাহলে সেই নির্বাচন কি নাগরিকত্বের প্রশ্নে বাতিল হয়ে যাবে?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম বৈষম্য হোক, লিঙ্গ বৈষম্য হোক, সেটা আমরা মানি না। এরা কি জাস্ট একটা হাতের মোয়া? দুই তিন দিনে তো কিছু (নাগরিকত্ব) দিতে পারবে না। হয়তো শুধু বলবে আপনারা পোর্টালে নাম লেখান। তখন সব ধর্মের মানুষই নাম লেখাবেন। কিন্তু সেই নাম আদৌ কার্যকর হবে?’’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, যাঁদের ভোটে সরকার তৈরি হয়েছে, তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে কী ভাবে প্রশ্ন তুলতে পারে বিজেপি! তিনি বলেন, ‘‘এ জন্যই কি মতুয়া ভাই, নমঃশূদ্রদের আধার কার্ড বাতিলের চক্রান্ত হয়েছিল? কিন্তু আমরা তো সবাই নাগরিক। ভোট আজ আছে। কাল ফুরিয়ে যাবে। আর সিএএ একটা ছলনা। আমি বিশ্বাস করি, বাংলায় যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা সবাই এ রাজ্যের নাগরিক। তাঁদের নাগরিক অধিকার, তাঁদের সামাজিক অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, সম্পত্তির অধিকার— সবই থাকবে। এই নতুন আইন সেই অধিকার খর্ব করবে না তো?’’ মমতা জানান, তিনি ভাল ভাবে আইন দেখেশুনে আরও বিস্তারিত তথ্য দেবেন।