পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন। তার আগে উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূল বনাম তৃণমূল দ্বন্দ্ব চরমে। এই পরিস্থিতিতে গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে কড়া বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ঝগড়াঝাটি বরদাস্ত নয়, দেগঙ্গায় দলীয় কর্মিসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাফ জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় তৃণমূলের কর্মিসভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘সিনিয়র লিডারদের মর্যাদা দিতে হবে! এটা আমি বার বার বলছি। পুরনো চাল কিন্তু ভাতে বাড়ে। আর নতুন চাল আগে বাড়ে। দুটো চালকেই আমার দরকার।’’
গত কয়েক দিন ধরেই জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম এবং ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দ্বন্দ্বে শিল্পাঞ্চলের রাজনীতি উত্তপ্ত। সেই আবহে স্থানীয় স্তরে কোন্দল রুখতেও মমতা কড়া বার্তা দিয়েছেন বৃহস্পতিবারের সভা থেকে।
তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে কোনও নেতা যদি ভাবেন, তিনি বড় হয়ে গিয়েছেন, তা তৃণমূলে করা যাবে না। কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না। ’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘নিজের ভাল করার জন্য তৃণমূল নয়। মানুষের ভাল করার জন্য তৃণমূল। কেউ কেউ নিজেকে কেউকেটা ভাবছেন। দল সব বিষয়ে নজর রাখছে। আমার নজরও রয়েছে।’’
দলীয় নেতা-কর্মী থেকে মন্ত্রী সকলকে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে মমতা বলেন, “মন্ত্রীরা জেলায় বেশি করে ঘুরুন। মানুষের সমস্যার দিকে নজর দিন। দরকার হলে চায়ের দোকানে বসুন।” লোকসভা নির্বাচনের আগে পুরনো এবং নতুন নেতাদের মিলেমিশে কাজ করার বার্তাও দেন মমতা। সিনিয়র নেতাদের অসম্মান করা যাবে না বলেই সাফ জানান। বলেন, “পুরনো কোনও কর্মী অভিমান করে থাকলে, তাঁদের বাড়ি থেকে ডেকে আনুন।”
গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে একটি কোর কমিটিও গঠন করেন মমতা। যার চেয়ারম্যান করা হয়েছে পানিহাটির বিধায়ক তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষকে। কমিটিতে রাখা হয়েছে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, রথীন ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, তাপস রায়, বীণা মণ্ডল, হাজি নুরুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ দাস, নারায়ণ গোস্বামী, সুকুমার মাহাতো, রফিকুল ইসলাম মণ্ডল, রফিকুর রহমান, এটিএম আব্দুল্লাহ, সুরজিৎ বিশ্বাস, প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, তাপস দাশগুপ্ত এবং গোবিন্দ দাসকে।