রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু আজ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার থেকে বাঁচাতেই জ্যোতিপ্রিয়কে ২০২১ সালে খাদ্যমন্ত্রী করেননি মমতা। তবে বেআইনি ভাবে টাকা তোলা বন্ধ করতে চাননি মমতা। তাই জ্যোতিপ্রিয়কে পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান করা হয়। সেখানেই না থেমে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রাক্তন আইএএস অফিসার এ সুব্বিয়াকে পশ্চিমবঙ্গ প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ কর্পোরেশনের এমডি করা হয়। আমলা নিয়োগের দায়িত্বে থাকা কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার বিভাগের মন্ত্রী মমতা নিজেই। তাহলে মুখ্যমন্ত্রী নিজে না চাইলে এই দুর্নীতিগ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত আমলাকে পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ কর্পোরেশনে নিয়োগ করা হত না।
এর আগে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে আগেই গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর বার বার উঠে এসেছিল জ্যোতিপ্রিয়র নাম। এদিকে সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাকিবুর রহমানের অন্তত ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে। নামে, বেনামে, আত্মীয়দের নামে এই বিপুল সম্পত্তি। এগুলি রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ৬টি সংস্থায় শেয়ার রয়েছে বাকিবুরের। সেই শেয়ার মিলিয়েই বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় ৫০ কোটি। নিউ টাউন, রাজারহাট, পার্কস্ট্রিটে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাকিবুরের একাধিক হোটেল, পানশালাও রয়েছে। বিদেশেও তার সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর। প্রসঙ্গত, বাকিবুরের ফ্ল্য়াট থেকে সরকারি দফতরের প্রচুর স্ট্য়াম্প পাওয়া গিয়েছে। সেই স্ট্যাম্প কী জন্য ব্যবহার করা হত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে বকিবুরের দুর্নীতির সঙ্গে মন্ত্রী যোগের অভিযোগ বারংবার উঠছে।
আরও পড়ুন: Malda: ছড়িয়ে রয়েছে কন্ডোম, মহিলার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধারে জোরাল ধর্ষণ করে খুনের সন্দেহ
রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার শুক্রবার বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতার তো সময়ের অপেক্ষা ছিল। যে পরিমাণ সম্পত্তি বাকিবুরের পাওয়া গেছে সেই সম্পত্তির উৎস কী? যে পরিমাণ সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে সেটা তো সম্পত্তি নয়, বরং রাজত্ব বলা ভালো। সেই সম্পত্তি বা রাজত্ব আসলে কার? কার সম্পত্তি বাকিবুরের নামে আছে? এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা এর আগেও জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ পেয়েছি।’’ এর পরেই কোনও নাম না করে সুকান্তের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে যত চোর হচ্ছে তত চোরের রানির ছটফটানি বাড়ছে। এখন কান এসেছে পরে মাথাও আসবে।’’
অন্য দিকে, জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সুজনের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জানতেন জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হবে। কারণ, দিল্লির সব তিনি খবর পান।’’ অতীতে কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় ধর্না দিলেও জ্যোতিপ্রিয়ের জন্য কেন সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করলেন না, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে সুজনের দাবি, রাজ্য সরকার ১০ কোটি মানুষকে রেশন দেওয়ার দাবি করলেও, সে হিসাবে বিপুল গরমিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee : বিশ্বভারতীর ফলক থেকে রবীন্দ্রনাথের নাম সরানোয় হুঁশিয়ারি মমতার