এক দিন আগেই দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে ‘খোঁচা’ দিয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এবার নিশানায় দলের মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গ সেই সিবিআই। পর দুদিন দুই শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি দলের জবাব নিয়ে নতুন করে ভাবতে বসেছে রাজনৈতিক মহল।
স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে সিবিআই (SSC CBI) তদন্ত নিয়ে শুক্রবার বিস্ফোরক কথা বললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, যে সব কেলেঙ্কারির খবর আসছে তা বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) মেয়াদে হয়নি। এ ব্যাপারে কিছু জানতে চাইলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chattopadhyay) জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে। তিনি বুঝিয়ে বলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: Accident: টোটো-ডাম্পারে মুখোমুখি ধাক্কা বর্ধমানে, মৃত একই পরিবারের চার জন
কুণালের এই মন্তব্য থেকেই সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, স্কুল সার্ভিসে কেলেঙ্কারির দায় কি তবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর উপর চাপিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল? কারণ কুণাল এদিন আরও যা যা বলেছেন, তা বেশ অর্থবহ। এবং তাতে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক ভাবে যা যা করার সব করেছেন। অর্থাৎ যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী নন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এসএসসি নিয়ে আদালতের নির্দেশে যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই তাঁরা সবাই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে দায়িত্বে ছিলেন। সব থেকে বড় কথা, পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশে, এমনকী সিবিআই নিজে থেকে তলবও করছে না। কাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে, কখন তাঁরা সিবিআই দফতরে যাবে তাও ঘোষণা করেছে আদালতই। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চক্রান্তও বলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করাও কঠিন বিষয়। তাহলেও সমস্ত পরিস্থিতি বিচার করে দল স্বয়ং মহাসচিবের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ তৈরি করতে চাইছে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিসে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুটি বিষয়ে তদন্তের ভার এখন সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একটি গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলা, অন্যটি নবম ও দশম শ্রেণিতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ মামলা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দুটি মামলাতেই বারবার সিবিআইকে আদালত জানিয়েছে, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি বা প্রভাবশালীকে জেরা করতে চাইলে তা তারা করতে পারেন। এ ব্যাপারে আদালেতর অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। তা ছাড়া বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি এ প্রশ্নও করেন যে উপদেষ্টা কমিটির কোনও বৈঠক তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর চেম্বারে হয়েছিল কিনা। সন্দেহ নেই সেই বিষয়টা সিবিআইও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। অর্থাৎ স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ নিয়ে ক্রমশই জল ঘোলা হতে শুরু করেছে। ব্যাপারটা কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: Mograhat Murder সিভিক ভলেন্টিয়ার–সহ দু’জনকে গুলি করে, গলা কেটে খুন, অগ্নিগর্ভ মগরাহাট