শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যাওয়াই হল কাল।বীরভূম (Birbhum)অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে মৃত্যু হল নব দম্পতির।
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি বিয়ে হয় কাজি সাজিদুল রহমান ও মার্জিনা খাতুনের। নানুরের দান্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাজিদ। স্ত্রীর বাপের বাড়ি বগটুইতে যাওয়ার জন্য সোমবার বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। সাজিদুল ও স্ত্রী মার্জিনা সোমবার সকাল ৯ টা নাগাদ নানুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সেই মতো দুপুর ১২ টা নাগাদ রামপুরহাটে বগটুই গ্রামে পৌঁছান তাঁরা। বাড়িতে ফোন করে পৌঁছে যাওয়ার কথাও জানান।
সাজিদুরের বাবা কাজি নুরুল জামাল জানিয়েছেন, “সকালে ছেলে বউমা রামপুরহাটে যায়। দুপুরে পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়ে ফোন করেছিল। তারপর রাত ১২ টা নাগাদ ছেলে তার বন্ধু কাজি মহিমকে ফোন করে বলে, আমাদের একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে চারিদিক থেকে আগুন (Fire)লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, তুই পুলিশ (Police)পাঠানোর ব্যবস্থা কর। এই দুটো কথা বলেই ফোন বন্ধ। সকালে আমি ফোন করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু ততক্ষনে বোধ হয় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। আমরা খবর পেয়ে সকাল ১০ টার সময় বেরিয়ে রামপুরহাট হাসপাতালে যাই। গিয়ে যা দেখলাম, লাশ চেনা যায়নি। মাথার খুলিটুকু শুধু আছে, আর কিছু নেই।আমার ছেলে বউমার খুনের বিচার চাই।”
সাজিদুর রহমানের মা দিদি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন। পাশাপাশি তারা দাবি করেছেন তাদের ছেলে ও বৌমার দেহ(Dead body) শনাক্ত করে যেন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রামপুরহাটের বগটুইয়ের ‘হত্যাকান্ড’ নিয়ে কার্যত তোলপাড় রাজ্য। গোটা ঘটনায় সন্ত্রস্ত বগটুইয়ের বাসিন্দারা। একে একে গ্রাম ছেড়েছে বহু পরিবার। রামপুরহাট পরিণত হয়েছে আতঙ্কপুরীতে। জনশূন্য গ্রামে মঙ্গলবার রাতে দলা পাকানো দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়েছে। মৃতদের মধ্যে শিশু ও মহিলা রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সোমবার রাতে খুন হন তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত অনেকের। দমকলবাহিনী বলছে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেছে রাজ্য।