আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে বাংলায় সভার দিনবদল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। জানা গিয়েছে, আগামী ৬ মার্চ নয়, ৮ মার্চ – নারী দিবসকে সামনে রেখে ওইদিনই বারাসতে (Barasat) জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন তিনি সন্দেশখালির (Sandeshkhali) মহিলাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
প্রথমে বারাসতের সভা করার দিন ৬ মার্চ ঠিক হলেও সন্দেশখালির পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিনে বারাসতে প্রধানমন্ত্রীর সভা করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় বিজেপি। কারণ, সন্দেশখালিতে শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেখানকার মা-বোনেদের রাতের অন্ধকারে পার্টি অফিসে ডেকে তাঁদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। এমন ঘটনা চলেছে বছরের পর বছর। রেশন দুর্নীতি মামলায় ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকরা সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন। তার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যান সন্দেশখালির শাহজাহান। তার পর স্থানীয় নেতারাই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন। একের পর এক মহিলা তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া নির্যাতনের অভিযোগ তুলে অভিযুক্ত করতে থাকেন তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের।
অভিযুক্ত দুই নেতা গ্রেফতার হলেও বেপাত্তা শাহজাহান। বিক্ষোভ বেড়েই চলেছে মহিলাদের। সেই ক্ষোভের আঁচ প্রধানমন্ত্রীর সভায় তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। তাই বারাসতের সভায় সন্দেশখালির নির্যাতিত মহিলাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন মোদী। সরব হতে পারেন মহিলাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে। আর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন প্রধানমন্ত্রীর মুখে রাজ্যের শাসকদলের এমন সমালোচনা লোকসভা ভোটের আগে অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলেই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
শনিবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিল বিজেপির শীর্ষনেতারা। তার পরেই জানা যায়, ১ মার্চ আরামবাগ, ২ মার্চ কৃষ্ণনগর এবং ৮ মার্চ বারাসতে সভা করবেন মোদী। সে দিন মহাশিবরাত্রি। তাই বিজেপি নেতৃত্ব সভার নাম দিয়েছে ‘নারী শক্তি বন্দনা কর্মসূচি’।
প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বিধানসভা এবং লোকসভায় মহিলাদের জন্য এক তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ করেছেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর নারী শক্তিকে সম্মান জানিয়েছেন। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের উদ্দেশে নিজের কথা বলবেন।’’
এদিকে, মোদীর এই সফরকে স্বাগত জানিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর বক্তব্য, ”গত আড়াই বছরে মোদি কেন, কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রীই কি এই আরামবাগ বা বারাসতে এসেছেন? খোঁজ নিয়েছেন বাংলার মানুষ কেমন আছেন? কোনও প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে কি না,এসব জানতে চেয়েছে? তাই তো বলি, বিজেপি বসন্তের কোকিল। পরিযায়ী। ভোট এলেই ওরা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছে।”