স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল আগেই। স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলেও আসেন তরুণী। তার পরেও স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পাননি। অভিযোগ, স্ত্রীর নগ্ন ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করছেন স্বামী। বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে লাভ হয়নি কিছুই। তাই থানার সামনে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা বধূর। শুক্রবার রাতে ঘটনাটিকে ঘিরে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার জেলা সাইবার ক্রাইম থানা চত্বরে জোর শোরগোল শুরু হয়।
তরুণী জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মৃত্যুঞ্জয় পেশায় ব্যবসায়ী। করণদিঘিরর টুঙ্গিদিঘির সাধনপুরের বাসিন্দা। প্রথম দিকে দিব্যি চলে দম্পতির সংসার। বিয়ের ৩ মাস পর থেকেই সম্পর্কের অবনতি হয়। মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন বাপের বাড়িতে। কিন্তু তারপরও স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তি পাননি বলে দাবি তাঁর। সম্প্রতি তরুণীর আপত্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেন তাঁর স্বামী। অর্থ উপার্জনের জন্য স্বামী এই কাজ করেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগ জানিয়ে প্রথমে করণদিঘি থানার দারস্থ হন নির্যাতিতা স্ত্রী। করণদিঘি থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানায় যেতে বলে নির্যাতিতাকে। এর মধ্যে স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যায় স্বামীর। এরপর রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার দারস্থ হন ওই গৃহবধূ। অভিযোগ, দীর্ঘ সাত মাস ধরে লাগাতার ঘুরিয়ে যাচ্ছে সাইবার ক্রাইম থানা বলে অভিযোগ গৃহবধূর।
শুক্রবার নির্যাতিতাকে অভিযুক্ত স্বামী এবং তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বসে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সাইবার ক্রাইম থানায় ডাকা হয়। সেই মতো এদিন বিকাল ৪ টে নাগাদ থানায় মাকে নিয়ে হাজির হন নির্যাতিতা। কিন্তু সন্ধে ৬ টার পরও কেউ আসেনি। অভিযোগ, সাইবার ক্রাইম থানার মহিলা পুলিশ কর্মীরা নির্যাতিতাকে ৬ টার পরে আরও বেশি অপমান করে থানা থেকে চলে যেতে বলেন। এরপরই ওই থানা চত্বরে নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে দাবি তরুণীর৷
রক্তাক্ত অবস্থায় তরুনীকে অবস্থা দেখে ঘাবড়ে যান রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ আধিকারিকরা৷ ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে আসেন রায়গঞ্জ জেলার ডিএসপি ট্রাফিক। খানিক বাদে আসেন রায়গঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার ও করনদিঘি থানার আইসি পলাশ মহন্ত। গুরুত জখম অবস্থায় তরুনীর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে স্থানীয় এনজিও কর্মীদের তাঁর কাউন্সিলিং এর জন্য ডাকা হয়।