তৃণমূল নেত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরে আগেই কোচবিহারের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা তথা কেএলও (KLO) জঙ্গি জীবন সিংহ ফের বাংলা ভাগের দাবি তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। স্পষ্ট হুঁশিয়ারি ছিল, কামতাপুর পৃথক রাজ্য চাই। এই দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কেএলও জঙ্গি হুমকি দেয়, কোচ-কামতাপুরে পা রাখলে শেষ করে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)প্যারেড গ্রাউন্ডের দলীয় কর্মিসভা থেকে তার জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বললেন, ”বাংলা ভাগ না করলে আমায় মেরে ফেলবে বলছে, আমার বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে দেখাক। আমিও জানি কীভাবে বন্দুকের নল ভোঁতা করতে হয়।” এর নেপথ্যে তিনি বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। ফের বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতাসীন থাকলে বঙ্গভাগের স্বপ্ন অধরাই থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের।
আলিপুরদুয়ারের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মানুষকে বলব আমরা সবাই এক। কোনওভাবেই বাংলা ভাগ হতে দেব না। আমি রক্ত দেওয়ার জন্য তৈরি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল,পঞ্চানন বর্মাকে ভাগ করতে পারবেন? কিছু নেতার কাজকর্ম নেই আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। বলছে উত্তরবঙ্গকে ভাগ না করলে আমাকে মেরে দেবে। আমি বলি তোমার ক্ষমতা থাকলে আমার বুকে বন্দুক ঠেকাও। এতবড় ক্ষমতা তোমাদের?’
আরও পড়ুন: Jamai Sasthi 2022: মাত্র ৫০০ টাকায় চর্ব্য চোষ্য লেহ্য পেয়! সৌজন্যে পঞ্চায়েত দফতর
এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক বন্দুক দেখে এসেছি। এসব বন্দুক আমাকে দেখিও না। এসব বন্দুক ভোঁতা করতে আমি জানি। বিজেপি প্রশ্রয়ে এসব হচ্ছে। এটা মনে রাখবেন। যখনই ভোট আসে তখনই বিজেপি ভাগ করার কথা বলে। কিছু টাকা দেয়। ভোট এলেই উজালা, আর ভোটের পর আঁধার। এক কথা, আর এক কাজ। তাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আপনাদের জন্য অনেক কিছুই করে দেব। তৃণমূল কংগ্রেস না থাকলে, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী হবে না, স্বাস্থীসাথী হবে না। ভুল বুঝবেন না। আমাদের যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমাকে বলবেন। বিজেপি, সিপিএমের কথায় ভুলবেন না। ওরা কখনও কিছু করবে না। মনে রাখবেন বিজেপি মিথ্যে বলে, ফেক ভিডিয়ো ছড়ায়।’
২ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রয়েছেন আলিপুরদুয়ারে। এদিন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে কর্মিসভার পর বুধবার যোগ দেবেন গণবিবাহের অনুষ্ঠানে। সরকার উত্তরবঙ্গের জন্য কী কী কাজ করেছে, তার খতিয়ান এদিন তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি স্থানীয় ভাষা, জনজাতিদের উন্নয়নে পৃথক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হয়েছে। এলাকার নেতাদের সেসব উদাহরণ দিয়ে তাঁর পরামর্শ, ”ঘর থেকে বেরিয়ে আসুন, মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করুন।”
আরও পড়ুন: Ketugram: স্ত্রীর কব্জি কাটার ঘটনায় কেতুগ্রামে ধরা পড়ল অভিযুক্তের বাবা-মা