পাহাড় বিক্রি করছে সরকার? পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের আনাচে-কানাচে ঘুরছে এই প্রশ্ন। কলাবনী পঞ্চায়েত এলাকার তিলাবনী পাহাড় কেটে গ্রানাইট উত্তোলনকে কেন্দ্র করে তাই শুরু হয়েছে আন্দোলন। একটি বেসরকারি সংস্থাকে পাথর কেটে গ্রানাইট তোলার বরাত দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ধর্ম, জীবন-জীবিকা এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেই কারণে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা। এদিকে, হুড়া ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রানাইট উত্তোলনের বরাত দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের তিলাবনী আদতে ছোট্ট পাহাড় হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ সহ পাহাড়প্রেমীদের পর্যটন মানচিত্রেও এর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এমনকী ডিসেম্বরে জাতীয় স্তরের বোল্ডার ক্লাইম্বিংও অনুষ্ঠিত হয়েছে পাহাড়েই। আর এই তিলাবনী পাহাড়ের কোলেই রয়েছে কলাবনী পঞ্চায়েতের তিলাবনী, লেদাবনা, পড়শিবনা এবং মাধবপুর, এই চারটি গ্রাম। সেখানকার শতাধিক বাসিন্দার কাছে একাধারে যেমন পাহাড় স্থানীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত, তেমনই এই পাহাড়কে কেন্দ্র করে জড়িয়ে রয়েছে বহু মানুষের জীবিকাও।
আরও পড়ুন: Weather Update: মার্চেই বঙ্গে তীব্র দহন, জারি হল তাপ প্রবাহের সতর্কতা
প্রাকৃতিক দিক থেকেও বৈচিত্র্যপূর্ণ তিলাবনী। তাই গ্রানাইট উত্তোলনের নামে পাহাড় ধ্বংসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। পাহাড় বাঁচানোর দাবিতে শুরু হয়েছে গণ আন্দোলন। রবিবার এক প্রতিবাদ মিছিলে বের করেন এলাকার অগণিত মানুষ। আন্দোলনকারী বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, “এই পাহাড় ধ্বংস করে ফেলা হবে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। তাই আমরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। তিলাবনীর সঙ্গে আমাদের ধর্মবিশ্বাস জড়িত। আমাদের ধারণা এটি আসলে পাহাড় ধ্বংস করার একটি চক্রান্ত। তাই আমরা সাধারণ মানুষ এক ছাতার তলায় এসে আন্দোলন করছি।”
এদিকে, স্থানীয় বি এল এল আর ও অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, “পাহাড় কেটে গ্রানাইট উত্তোলনের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। যারা আন্দোলন করছেন এবং যারা বরাত পেয়েছেন দুপক্ষের কথাই ভাবতে হবে। এ নিয়ে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।”
হুড়া ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ধ্রুবঙ্কুর ঠাকুর বলেন, “আমি নিজে এলাকা পরিদর্শনে দেখেছি পাহাড়ের একটি অংশে গ্রানাইট উত্তোলনের বরাত দেওয়া হয়েছে। বরাত পাওয়া সংস্থার কাগজপত্র সমস্ত ঠিক রয়েছে। এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে। স্থানীয় মানুষের ধর্ম ও সংস্কৃতির আবেগকে মাথায় রেখেই সমস্ত কাজ করা হবে।”
আরও পড়ুন: বিধানসভায় এলেও ভাতা পাবেন না, আদালতে যেতে পারেন শুভেন্দুরা