রামপুরহাটের বগটুইয়ের নৃশংসতার রেশ কাটেনি। তারইমধ্যে নদিয়ার হাঁসখালিতে গুলিবিদ্ধ হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা।
বুধবার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন সহদেব মণ্ডল। তাঁর স্ত্রী অনিমা হাঁসখালি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত আটটা নাগাদ মুড়াগাছা বাজারে পিছন থেকে এসে সহদেবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃীতরা। চারদিক রক্তে ভেসে যেতে থাকে। দ্রুত তৃণমূল নেতাকে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা নাগাদ তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সহদেবের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, কলকাতায় আনার পথে দু’বার রক্তবমিও করেন তিনি। সহদেবের উপর হামলার পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এলাকায় কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই আক্রমণের জন্য দায়ী। বিজেপি-র পক্ষ থেকে শাসকদলের এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
গুলি চালানোর ঘটনায় বিজেপির ইন্ধন আছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী রত্না ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, কারা এবং কেন গুলি চালিয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার দাবি করেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে সহদেবের উপর গুলি চলেছে। রাজ্যে আইনের শাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন জগন্নাথ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে একাধিক জনপ্রতিনিধি, নেতা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম মণ্ডল, ঝালদা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। তারপর সোমবার রাতে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। তারপরেই তাণ্ডব শুরু হয় বগটুই গ্রামে। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের।