সন্দেশখালি নিয়ে এবার পালটা প্রচারে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেশখালিতে যে গুরুতর অভিযোগগুলি উঠে এসেছে তার মধ্যে অন্যতম হল জমি জবরদখল, জমি দখল করে ভেড়ি নির্মাণ এবং জমির পাট্টা না দেওয়া। জমি সংক্রান্ত এই সমস্ত অভিযোগ গ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপশি, দখল হওয়া জমির মালিকানা ফেরত দিতে শুরু করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৬৫ জনের বেশি গ্রামবাসীর জমি ফেরত দিয়েছে সরকার।
রবিবার থেকে সন্দেশখালির দু’টি ব্লকে মোট সাতটি শিবির খোলা হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, দিনের শেষে অন্তত ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে সেই সব শিবিরে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সন্দেশখালি ১ ব্লকে জমা পড়েছে ৯০টি অভিযোগ। তার মধ্যে জমি সংক্রান্ত অভিযোগ আটটি। আর সন্দেশখালি ব্লকে সব মিলিয়ে ৩২০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৪০টির মতো জমি সংক্রান্ত অভিযোগ। বাকিগুলির মধ্যে বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা সংক্রান্ত অভিযোগও রয়েছে।
সন্দেশখালি এলাকায় যাঁদের জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মতামত নিয়ে ভিডিয়ো বার্তা তৈরি করছে তৃণমূল। সেই ভিডিয়ো বার্তা সমাজ মাধ্যমে প্রচার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। সন্দেশখালি ইস্যুতে গত কয়েকদিনে কিছুটা ব্যাকফুটে যেতে হয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে। তবে একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে যাতে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হয় সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশিকা রয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে যে স্থানীয় মানুষের যে আন্দোলন দলা পাকিয়ে উঠেছে তার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল, জোর করে জমি দখল। এই জমি সরকার নেয়নি। এ ব্যাপারে মূল অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান ও তার ভাই সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া তৃণমূলের আর এক নেতা অজিত মাইতির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এলাকার মানুষ। মূল অভিযোগ হল, তাদের জমি জোর করে দখল করে সেখানে মাছের ভেরি বানানো হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, কৌশলগত ভাবেই সন্দেশখালির আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে সরকার। এলাকার মানুষের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে একদিকে যেমন জমি ফেরত দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে, তেমনই এবার শেখ শাহজাহান, শেখ সিরাজউদ্দিনদের গ্রেফতার করার তৎপরতাও শুরু হয়েছে। রবিবার রাতে অজিত মাইতিকে আটক করেছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন শাসক দল পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছে, ৭ দিনের মধ্যে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করবে পুলিশ। অর্থাৎ যাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে, তাদের গ্রেফতার করে অসন্তোষ হাওয়া বের করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে।