অবশেষে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান। ৫৫ দিন বেপাত্তা থাকার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ল সন্দেশখালির এই তৃণমূল নেতা। পুলিশের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর বামনপুকুর এলাকা থেকে গত রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে শাহজাহানকে।
গ্রেফতারির পর তাঁকে সোজা আনা হয়েছিল বসিরহাট মহকুমা আদালতের গারদে (কোর্ট লকআপ)। বৃহস্পতিবার সকালে বসিরহাট মহকুমা আদালতের কোর্ট লকআপ থেকে বার করে কিছু ক্ষণের জন্য শাহজাহানকে আনা হয় এজলাসে। লকআপ থেকে এজলাসে আনার পথে সাদা কুর্তা, পাজামা পরিহিত শাহজাহান যদিও কোনও কথা বলেননি। আদালত তাঁকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে রাজ্যের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি-কে (CID)। আগামী ১০ দিন শাহজাহান থাকবেন ভবানীভবনে। আর এই সময়ের মধ্যে পুলিশ হেফাজতে শাহজাহানের বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করে আদালতের দ্বারস্থ হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ইডি আশঙ্কাপ্রকাশ করেছে, রেশন দুর্নীতি মামলায় যে তদন্ত চলছিল, যে সূত্রে শাহজাহানকে বাগে পেতে এত তৎপরতা, সেই মামলার বেশ কিছু নথি নষ্ট হতে পারে। এনিয়ে অবশ্য হাই কোর্ট এখনও কোনও পর্যবেক্ষণ জানায়নি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী শংকর আঢ্যকে গ্রেপ্তারের পর জেরায় ইডির হাতে আসে শেখ শাহজাহানের নাম। শাহজাহান উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকরা। আর সেই ঘটনার সূত্র ধরেই জ্বলে ওঠে সন্দেশখালি। শাহজাহানের গ্রেপ্তারির দাবিতে জোরদার দাবি ওঠে এলাকায়। তদন্তে নেমে আইনি জটিলতার জেরে রাজ্য পুলিশ এতদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সম্প্রতি আদালত জানিয়ে দেয়, শাহজাহানের গ্রেপ্তারিতে বাধা নেই কোনও। এর পরই বুধবার রাতে শাহজাহানকে বসিরহাটের মিনাখাঁ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।