দলের একাধিক নেতা-নেত্রীকে বিঁধে তোপ দাগলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। শ্রীকান্তর অভিযোগ, উমা সরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরত, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ এবং উত্তরা সিংহের মতো নেতানেত্রী ‘লুটেপুটে’ খাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও তাঁদেরকে দল ‘সম্পদ’ বলে মনে করছেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। শ্রীকান্তর বক্তব্যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। তড়িঘড়ি শ্রীকান্তকে শোকজ করেছে দল। যদিও এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করেনি The News Nest।
পশ্চিম মেদিনীপুরে শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বর্তমান প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। গত শুক্রবার শালবনীতে একটি ছোট্ট কর্মী সভা করছিলেন তিনি। সেই কর্মী সভাতে কর্মীদের সামনে নিজের মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। শ্রীকান্ত মাহাতোর কর্মীদের সামনেই মন্তব্য-” বাইরে থেকেই দেব দেবীরা যেমন জুন, নুসরত, মিমি , সন্দীপ সিংহ, নেপাল সিংহ, উত্তরা সিংহরা লুটেপুটে খাচ্ছে। ওরাই দলের সম্পদ, ওদের মত খারাপ লোকের কথা শুনছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেত্রী ও শীর্ষ নেতারা। এরা যদি দলের সম্পদ হয় তাহলে মন্ত্রিত্ব চলে গেলেও ক্ষতি নেই। এমন করলে তো দল করা যাবে না। ওরাই টাকা ছাপিয়ে চলেছে। এরা চুরি করে যাবে আমাদের চুপ থাকতে হবে। দল চোরেদের কথাই শুনবে। আজ সবাই বলছে ক্যাবিনেটের মন্ত্রীরা চোর। এমন হলে দল ছেড়ে দিয়ে আশ্রমে চলে যেতে হবে।”
আরও পড়ুন: SSC Scam: হাজারিবাগের হোটেলে বিপুল অঙ্কের টাকা! ভিনরাজ্যেও পার্থর সম্পত্তির হদিস
আড়াই মিনিটের ওই ভিডিয়োয় শ্রীকান্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের কি বাঁচার অধিকার থাকবে না? আমাদের নাগরিকত্ব কি থাকবে না? এটা আমরা বলতে চাই। আজ থেকে পরিকল্পনা করে জয়যাত্রা শুরু করব। আমরা পুলিশ এবং বিডিওর কাছে স্মারকলিপি জমা দেব। আমাদের নাগরিকত্ব, অধিকার বন্ধ করার ব্যবস্থা যদি করে, তা হলে আমরা কী করব? কী করা উচিত? সে জন্য পশ্চিমাঞ্চল নাগরিক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল কৃষক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল বুদ্ধিজীবী সমাজ আমরা তৈরি করব। আমরা মমতা’দি পর্যন্ত যেতে চাই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ, সুব্রত বক্সীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা বুঝতে চাননি। খারাপ লোককেই তাঁরা ভাল লোক বলছেন। তা হলে আমরা বাঁচব কী করে? খারাপ লোককে তো খারাপ লোক বলতে হবে। আর ভাল লোককে ভাল লোক বলতে হবে।”
এ হেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর শ্রীকান্তকে শোকজ করে দল। সেই শোকজ নোটিস পাওয়ার পরেই সুর বদল করেন প্রতিমন্ত্রী। শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘আমি ভুল করেছি। দলের কাছে ভুল স্বীকার করেছি। আবেগবশত আমি ভুল বলেছিলাম।’’
শ্রীকান্তর ওই ভিডিয়োর সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী কিছু কথাবার্তা বলেছেন, যা ভিডিয়োর আকারে দলের কাছে পৌঁছেছে। যে কথাবার্তা একটু আপত্তিজনক। সেই জন্য গত কাল দলের নির্দেশে শ্রীকান্ত মাহাতোকে শোকজ করা হয়েছে। আজ উনি জবাবও দিয়েছেন। উনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন।’’
আরও পড়ুন: Sukanya Mondal: আবার কেষ্ট কন্যার জমিজমার হদিশ, কত সম্পত্তির মালিক সুকন্যা?