রাজ্য সরকারের সমস্ত অনুষ্ঠানে গাইতে হবে রাজ্য সংগীত। এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন রাজ্য়ের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি নির্দেশিকাতে লিখেছেন, ‘রাজ্যের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, গরিমার জন্য রাজ্য দিবস এবং রাজ্য সংগীতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর ১ বৈশাখ দিনটিকে ‘রাজ্য দিবস’ বা ‘বাংলা দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হবে। পাশাপাশি রবিগুরুর লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটিকে ‘রাজ্য সংগীত’ হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।
রাজ্য সংগীত হিসেবে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি বেছে নেওয়ার পরেই চলতি বছর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তা গাওয়া হয়। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে উঠে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে রাজ্য সংগীত হিসেবে এই গান গাওয়ার সময় ‘বাঙালির পণ বাঙালির আশা’ বদল করে করা হয়েছিল ‘বাংলার পণ, বাংলার আশা’।
আর এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন নেটিজেনদের একাংশ। বিভিন্ন শিল্পীরাও মতামত প্রকাশ করেছিলেন। অধিকাংশেরই মন্তব্য ছিল যে রবীন্দ্র সংগীতের ভাষা বদল না করাই শ্রেয়। বিজ্ঞপ্তিতে গানটি উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে ‘বাঙালির পণ বাঙালির আশা’ -ই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ কোনও রকম শব্দ বদল করা হয়নি তা স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি গাইতে হবে ৫৯ সেকেন্ডের মধ্যে। গানটি গাওয়ার সময় উঠে দাঁড়াতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে গাইতে হবে জাতীয় সংগীত।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেবর মাসে বিধানসভায় রাজ্য সংগীত এবং রাজ্য দিবস নিয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসে তৃণমূল এবং প্রস্তাবক ছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে কোন দিনটিকে নির্ধারিত করা হবে তা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়। কারণ ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। কারণ এই দিনেই বাংলা ভাগের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সেই সময় বাংলা দুই ভাগে ভাগ হয়ে তৈরি হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিমবঙ্গ।
রাজ্য শাসক দলের একাংশ সেই সময় সরব হয়েছিল। যে দিনটির সঙ্গে দেশ ভাগের বেদনাদায়ক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তাকে কোনওভাবেই বাংলা দিবস বলে গ্রাহ্য করা সম্ভব নয় বলেও বলা হয়।