দিলীপ ঘোষের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে গেলেন সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সুকান্ত। দিল্লিতে নিজের দফতরে যাওয়ার আগে সুকান্ত সোজা চলে যান দিল্লিতে দিলীপের বাসভবনে। বিজেপির নানা বৈঠকের জন্য এখন দিল্লিতেই রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ। সুকান্ত তাঁর বাড়িতে গিয়ে দিলীপের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেন।
সোশাল মিডিয়ায় দিলীপের সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি শেয়ার করেছেন সুকান্ত মজুমদার। লিখেছেন, “তৃতীয়বারের মোদী সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পূর্বে বিজেপির অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও দাদা শ্রী দিলীপ ঘোষ মহাশয়ের কাছে আশীর্বাদ নিলাম। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীজির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি।” সেই ছবি নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা।
প্রসঙ্গত, সুকান্ত প্রথম থেকে দিলীপেরই ‘পছন্দ’ ছিলেন। দিলীপের পরামর্শেই সুকান্তকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও সুকান্তকে বালুরঘাটের প্রার্থী করেছিলেন দিলীপই। সঙ্ঘ পরিবারের ছেলে, শিক্ষিত ইত্যাদি দেখে সুকান্তের প্রার্থিপদের সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ। এমনকি, ২০২১ সালে যখন দিলীপকে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা প্রশ্ন করেছিলেন, বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসাবে দিলীপ কাকে দেখতে চান, তখনও সুকান্তেরই নাম বলেছিলেন দিলীপ। অর্থাৎ সুকান্তের রাজনৈতিক জীবনের যে প্রথম দু’টি সাফল্য, তার নেপথ্যে রয়েছেন দিলীপই। আবার সুকান্তও বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হওয়ার পরে দিলীপকে পাশে নিয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকটি করেছিলেন।
এমন সম্পর্ক প্রথম ধাক্কা খায় পঞ্চায়েত ভোটের সময়। দিলীপ প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, সুকান্তের অভিজ্ঞতা কম। পাল্টা জবাব দেন সুকান্তও। যা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। পরে অবশ্য তা ঠিকও হয়ে যায়। তার পরে আবার রাজ্যের নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে শুরু করেন দিলীপ। বিজেপির অভ্যন্তরের খবর, সেই সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুই দিল্লি নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছিলেন দিলীপকে নিয়ে। যার জন্য দিলীপের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ খোয়া যায়। দিলীপ-সুকান্তের দূরত্ব তৈরি হয়। আশীর্বাদে সেই পর্ব মিটেছে বলেই আশা রাজ্য বিজেপির নেতাদের একাংশের।