মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে খুন হয়েছিলেন বহরমপুর গার্লস কলেজের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী (Sutapa Murder Case)। সেই মামলায় বহরমপুর আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার জন্য তলব করা হয়েছে ওই সংস্থাটির নোডাল অফিসার রবি কুমারকে।
বহরমপুর গার্লস কলেজের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে খুনের আগে ফ্লিপকার্ট থেকে খেলনা বন্দুক কিনেছিল সুশান্ত চৌধুরী। খুনের সময় ফ্লিপকার্ট থেকে কেনা খেলনা বন্দুক দেখিয়েই স্থানীয়দের ভয় দেখিয়েছিল সুশান্ত। সরকার পক্ষের তরফেই ফ্লিপকার্ট কর্তার হাজিরার দাবি করা হয়েছিল আদালতে। বহরমপুর আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘বন্দুকটি যে তাঁদের সংস্থা থেকেই কেনা সেটা আদালতে নিশ্চিত করতেই ওই ই-কমার্স সংস্থাটির কর্তাকে বিচারকের সামনে হাজির হতে হবে।’ এই আবহে সরকারের দাবি মেনে ফ্লিপকার্ট কর্তাকে ৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিভাস আরও জানিয়েছেন, এই ধরনের মামলায় এখন ইলেকট্রনিকস্ এভিডেন্স বা বৈদ্যুতিন প্রমাণও, অপরাধ প্রমাণে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে উঠছে। যেমন এই মামলায় ‘রাইট ব্লগার’ নামে একটি ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে যার মাধ্যমে, সুতপাকে খুনের সময়কার মোবাইলে তোলা ভিডিয়ো সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেই ভিডিয়ো ফুটেজ আদালতে নথি হিসাবে পেশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ‘বেইমানমুক্ত মেদিনীপুর’, ডিসেম্বর জুড়ে নয়া কর্মসূচির ডাক অভিষেকের
গত ২ মে বহরমপুরের কাত্যায়ণীর গলিতে ভূগোল অনার্সের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে তাঁর মেসবাড়ির সামনে নৃশংসভাবে খুন করে তাঁর পূর্ব পরিচিত সুশান্ত চৌধুরী। সিসিটিভি ফুটেছে ধরা পড়ে হাড়হিম করা সেই খুনের ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইলে তোলা খুনের ভিডিয়ো রীতিমতো ভাইরাল হয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। ওই দিন রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় সুশান্তকে। ঘটনার ৮০ দিনের মাথায় সুতপা খুনের মামলার চার্জশিট জমা দেয় বহরমপুর থানার পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে, সুতপা বহরমপুর গার্লস কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি মালদার ইংরেজ বাজারে। তবে পড়াশোনার জন্য বহরমপুরের সূর্য সেন রোডের গোরাবাজারে একটি মেসে থাকতেন তিনি। দুজনের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
এক বান্ধবীর মাধ্যমেই সুশান্ত জানতে পেরেছিল, নতুন এক তরুণের সঙ্গে সুতপার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁর সঙ্গে একটি শপিং মলে সিনেমা দেখতেও গিয়েছিলেন সুতপা। এই খবর কানে যাওয়া মাত্র সুতপাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় সে। তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকম হুমকি দেওয়া পোস্টও করত সে। খুনের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বহরমপুরে মেস ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে সুশান্ত। তারপর খোঁজখবর নিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত একটি দোকান থেকে চাকু কেনে। ফ্লিপকার্টে অর্ডার দেয় খেলনা বন্দুক। ঘটনার রাতে সুতপাকে মেস থেকে ডেকে নেয় অভিযুক্ত। তাঁদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। আচমকা ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করে কলেজ ছাত্রীকে। চিৎকারে আশেপাশের বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে বন্দুক বার করে ভয় দেখাতে থাকে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পরে জানা যায় সেটি আসলে খেলনা বন্দুক।
আরও পড়ুন: Student Death: পরীক্ষায় নকল করার ‘মিথ্যা’ অভিযোগ, স্কুল-বান্ধবীকে দায়ী করে সিলিং ফ্যানে ঝুলল ছাত্রী