শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ তবে মেলার (Gangasagar Mela 2022) অনুমতি দিতে গিয়ে কোভিড বিধি মানার জন্য একাধিক কড়া শর্ত বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ মেলার আয়োজনে হাইকোর্টের এই সব নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ সেই কমিটিতে থাকবেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি, বিরোধী দলনেতা বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব বা তাঁর মনোনীত রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি৷
এই বছর হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। ডিসেম্বরের মাঝ পর্ব পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারপর থেকে করোনা-ওমিক্রন বাড়তে থাকে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মেলা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জনৈক অভিনন্দন মণ্ডল। পেশায় চিকিৎসক অভিনন্দনের দাবি ছিল, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে এই বছর মেলা বন্ধ রাখা উচিত। কারণ গঙ্গাসাগরে যে পরিমান সমাগম হয় প্রতি বছর তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়। আবার মকর সংক্রান্তির দিন গঙ্গাসাগরে স্নান করেন লাখ লাখ মানুষ। তার ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার জানায়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা তৈরি। কোভিড বিধি মেনে মেলার আয়োজন এবং পুণ্য স্নানের ছাড়পত্র দেওয়া যেতে পারে। রাজ্য সরকারের সেই উত্তরের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার হাইকোর্ট মেলার আয়োজনে অনুমতি দিল। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেওয়ার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিল। যে কমিটি গঙ্গাসাগরে করোনা বিধি মানা হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখবে।
আরও পড়ুন: Weather Updates: সঙ্গে রাখুন ছাতা, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার চোখরাঙানিতে রাজ্যে অকালবৃষ্টির সম্ভাবনা
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে জানিয়ে দেন, মেলা বন্ধ হচ্ছে না। তবে রাজ্য সরকার যে সব বিধি মেনে মেলা করার কথা আদালতে জানিয়েছে, সেসব যেন কাঁটায় কাঁটায় মেনে চলা হয়। একঝলকে দেখে নিন সেসব শর্ত –
- ১৯৭৬ সালে ‘গঙ্গাসাগর মেলা আইন’ ৩ নং ধারা অনুযায়ী, সাগরদ্বীপকে ‘নোটিফায়েড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
- গঙ্গাসাগর মেলায় বিধিনিষেধ মানার জন্য ২ জানুয়ারি রাজ্য যেসব প্রস্তাব দিয়েছিল, তার প্রত্যেকটি যথাযথভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করবেন স্বরাষ্ট্রসচিব।
- স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় এড়ানো নিয়ে এবং সমস্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে, যাতে মানুষ এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পান। অযথা আতঙ্ক এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলায় অংশগ্রহণে উৎসাহ করার জন্য বিজ্ঞাপন দিতে হবে।
- সমস্ত মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার জন্য ৩ সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধির নেতৃত্বে তৈরি কমিটিতে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বা তাঁর নির্বাচিত কোনও প্রতিনিধি এবং রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা তাঁর নির্বাচিত প্রতিনিধি। এই তিন সদস্যের কমিটি নিয়মকানুন কড়া পর্যবেক্ষণে রাখবেন। যদি বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে হয় এবং মেলা বন্ধের সুপারিশ করে এই কমিটি, তাহলে তৎক্ষণাৎ হাই কোর্ট মেলা বন্ধ করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ভর সন্ধেয় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গ, কম্পন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে