আবারও বেফাঁস সৌগত রায়। এবার বিরোধীদের জুতোপেটা করার হুমকি বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের। ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও-য় বিজেপির দিলীপ-সুকান্তকে একযোগে নিশানা সৌগত রায়ের। দিলীপ ঘোষকে ‘ফিটার মিস্ত্রি’ বলেও বেনজির আক্রমণ তৃণমূল নেতার।
রবিবার তিনি বলেন, ‘নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না করলে কেউ জুতোপেটা করলে দুঃখ করবেন না। কয়েকটা বাঁদর আছে বিজেপি করে। দিলীপ ঘোষ আর সুকান্ত মজুমদার নাম। আগে দিলীপ ঘোষ অশিক্ষিত ছিলেন। ক্লাস এইট পাশ। ফিটার মিস্ত্রি। আমি ভাবতাম যে ও যা ইচ্ছে তাই বলুক। কিন্তু এখন দেখছি সুকান্ত মজুমদার, সে বোটানির অধ্যাপক হয়েও সমান উগ্র কথা বলছে। সিপিআইএম, বিজেপি আর কংগ্রেসের যদি কেউ থাকেন, তাঁদের আমি হুঁশিয়ারি দিয়ে এই ডানলপের মোড়ে থেকে বলে যাচ্ছি, এখানকার তিনবারের সাংসদ হিসেবে, যে আপনারা যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না করেন, তাহলে যদি আপনাদের কেউ জুতোপেটা করে, আপনারা দুঃখ করবেন না। আপত্তি করবেন না।’
দুর্নীতি নিয়েও সুর চড়িয়েছেন সৌগত রায়। এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল জেলে। এই পার্থ–অনুব্রত প্রসঙ্গে বলেন, ‘যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির স্পষ্ট অভিযোগ, প্রমাণ আসবে, যেমন পার্থর ক্ষেত্রে এসেছিল, তার তৃণমূল কংগ্রেসে জায়গা হয় না, হতে পারে না, হবে না।’ এখন বিজেপি–সিপিআইএম এই ইস্যু নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসকে চোরের দল বলছে। তারই পাল্টা বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সৌগত রায়।
আরও পড়ুন: Cow Smuggling Case: অনুব্রতকে ডাকেন ‘বাবা’, পুরকর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েনের বাড়িতে সিবিআই হানা
সৌগতর মুখে অসৌজন্যের ভাষা ইদানীং কালে প্রথম শোনা যায় গত ১৪ অগস্ট। কামারহাটিতে একটি দলীয় কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে। তৃণমূলের সব চোর বলে মিছিল করলে পার্টি অফিসে ঢুকে যেতে হবে।’’ তা নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যেই ২২ অগস্ট খড়দহে বলেন, ‘‘যে দোষ করেছে তার শাস্তি হবে। কিন্তু সবাইকে চোর বললে আমরাও রুখে দাঁড়াব, উপযুক্ত শিক্ষা দেব। চোর না হয়ে বদনাম শুনতে পারব না।’’ কুকথার স্রোত বজায় রেখে ২৭ অগস্ট কামারহাটিতে বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি যদি আমাদের চোর বলে উত্ত্যক্ত করে, তা হলে কিন্তু তৃণমূল কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা একবার রুখে দাঁড়ালে ওদের এলাকাছাড়া হতে হবে।’’
তৃণমূল সাংসদের এমন মন্তব্যে পাল্টা তাঁকেই কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ”উনি জানেন যে আগামীবার টিকিট পাবেন না। তাই মার্কস বাড়ানোর জন্য এমন বক্তৃতা করছেন। ওঁর বয়স হয়েছে, এসব ওঁকে মানায় না। সংযত হোন, না হলে জনগণ ওঁকে গণতন্ত্রের জুতোপেটা করবে।”
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ”সৌগতবাবু ইদানীং যা বলছেন ওঁর কথার মূল্য থাকছে না। আমার ধারণা, বয়স বাড়ছে বলে দলে গুরুত্ব কম পাচ্ছেন। সেই কারণেই এসব বলে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। চোর না বলে কি বলা হবে, তা বলে দিন।”
আরও পড়ুন: Sehgal Hossain: জেলেও অনুব্রতের ছায়াসঙ্গী সায়গল, ওষুধ খাওয়া থেকে শরীরের যত্ন- দায়িত্ব তাঁর কাঁধে